পঞ্চায়েতে যে ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, তা আইনের পরিপন্থী বলে আদালতে জানাল তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে বুধবার ওই কথা জানান দলের সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের আদালতে কল্যাণবাবুর এ দিনের সওয়াল, পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৯ এপ্রিল বেলা তিনটে পর্যন্ত। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদি সেই সময়ের আগে মনোনয়ন পেশের মেয়াদ বাড়াত, তা হলে তা আইনমাফিক হত। কিন্তু বেলা তিনটের পরে (মেয়াদ বাড়ানো হয় রাতে) মেয়াদ বাড়িয়ে আইনমাফিক কাজ করেনি কমিশন। সেই অধিকার তার নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আয়ু শেষ হওয়ার পরে মৃতের জীবনকাল বাড়ানো যায় না।’’
এ দিন সওয়াল করে সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ দাস হিসেবে কাজ করছে।’’ তাঁর সওয়াল আজ, বৃহস্পতিবারেও চলবে। নির্বাচন নিয়ে স্থগিতাদেশ এখনও জারি রয়েছে।
এ দিন সকালে আদালত বসতেই সওয়াল শুরু করেন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য শুনে বিচারপতি তালুকদার জানতে চান, রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগে কোনও ভুল করলে, তার বিচার কে করতে পারে। কল্যাণবাবু জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার তিরিশ দিনের মধ্যে সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন বা জেলা জজের কাছে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ জানানো যায়। পঞ্চায়েত আইনেই তা রয়েছে।
ওই আইনজীবী জানান, ১০ এপ্রিল কমিশনের কাছে গিয়ে বোঝানো হয়, মেয়াদ প্রত্যাহার করাই আইনমাফিক হবে। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘‘মনোনয়ন পেশের মেয়াদ ৯ এপ্রিল বেলা তিনটে পর্যন্ত ছিল বলেই তার পরে মেয়াদ বৃদ্ধি যে আইন মাফিক হয় না, ১০ এপ্রিল তা কমিশনের কাছে গিয়ে
বোঝানো হয়।’’
সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কোর্টে বলেন, সংবিধান রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সব রকম ক্ষমতা দেওয়া সত্ত্বেও, কমিশন তার কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে। কী ভাবে কমিশন রাজ্যের আজ্ঞা পালন করছে এ দিন আদালতে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিকাশবাবু। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন দলের অভাব-অভিযোগ শুনতে নির্দেশ দেওয়ার পরে কমিশন মনোনয়ন পেশের সময় ৯ এপ্রিল বাড়িয়েছিল। সময় বাড়ানোর নির্দেশ দিতে গিয়ে কমিশন জানিয়েছিল, প্রার্থী হতে চেয়ে অনেকেই মনোনয়ন পত্র জমা দিতে চান। কিন্তু তাঁরা তা জমা দিতে পারেননি। সেই কারণেই বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।