দলের ছাপ্পার প্রতিবাদে সরে দাঁড়ালেন তৃণমূল প্রার্থী

তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁর দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধেই উঠেছে বুথ দখল করে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ। চোখের সামনে এই ঘটনা দেখার পরে আর স্থির থাকতে পারেননি অনিতা দেবনাথ। বিডিও-কে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিলেন, তিনি নিজেকে ভোট থেকে সরিয়ে নিলেন।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৪:১৬
Share:

তৃণমূল প্রার্থী অনিতা দেবনাথ। (ডান দিকে) নির্দল প্রার্থী শিখা দে। নিজস্ব চিত্র

তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁর দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধেই উঠেছে বুথ দখল করে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ। চোখের সামনে এই ঘটনা দেখার পরে আর স্থির থাকতে পারেননি অনিতা দেবনাথ। বিডিও-কে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিলেন, তিনি নিজেকে ভোট থেকে সরিয়ে নিলেন। একই সঙ্গে দাবি জানালেন, ওই পঞ্চায়েত আসনে ভোট যেন বানচাল করা হয়।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জংশন লাগোয়া বিবেকানন্দ-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চেচাখাতা এলাকায় ১২/১৪৪ নম্বর বুথে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন অনিতা। তাঁর বিরুদ্ধে একমাত্র প্রার্থী, নির্দল শিখা দে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শিখার পিছনে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের সমর্থন রয়েছে। যদিও শিখা নিজে তা মানতে চাননি।

অনিতা ও শিখার বাড়ি মোটে শ’দুয়েক মিটার দূরত্বে। অনেক দিন ধরেই দুজনের মধ্যে সখ্য। স্থানীয়রাই বলছিলেন, প্রচারে বেড়িয়ে এলাকার উন্নয়ন থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন ওঁরা, কিন্তু একে অন্যের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি। সোমবার স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোটগ্রহণ একটু ধীর লয়েই চলছিল৷ ফলে সন্ধে নাগাদও ভোটারদের লাইন ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ধে ৬টা নাগাদ আচমকা কিছু যুবক বুথে জোর করে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় ছাপ্পা ভোট। নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে রেগে ফেটে পড়েন অনিতা৷

Advertisement

আরও পড়ুন:
হিংসা চলছেই, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১
‘অশান্ত বাংলায় নিহত গণতন্ত্র’, পঞ্চায়েত নিয়ে চড়া আক্রমণে মোদী

১৯ জেলায় ৫৭৩ বুথে আজ ভোট

খবর পেয়ে পুলিশ আসে এলাকায়। তখন পুলিশের গাড়ি ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। তাঁর এজেন্টকে মারধর করা হয়েছে— এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে সামিল হন শিখা। সেই প্রতিবাদে নেমে পড়েন তৃণমূল প্রার্থী অনিতাও৷ এর পর ওখানে দাঁড়িয়েই সিদ্ধান্ত নেন, নির্বাচন থেকে সরে যাবেন। এই সিদ্ধান্তে অনিতার সঙ্গী হন শিখাও। দু’জনেই রাতে সেখানে উপস্থিত পুলিশকর্তাদের মাধ্যমে বিডিও’র উদ্দেশ্যে চিঠিও দেন৷ দু’জনের সই সমেত সেই চিঠিতে গোলমালের জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয় তৃণমূলের একাংশকে।

পরে অনিতা বলেন, ‘‘বহিরাগতরা এসে আমার বুথে ছাপ্পা ভোট দেবে, বিপক্ষ প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে মারধর করে অশান্তি করবে, এটা মানতে পারিনি৷’’ শিখা বলেন, ‘‘তৃণমূলের কিছু বহিরাগত এসে গোলমাল বাধায়। এটা মানতে পারিনি।’’ যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘এমন কোনও ঘটনা হয়নি৷ আমি দুই প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে কথা বলব৷’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর এমন কোন চিঠি পাইনি৷ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন