প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেদের মতপ্রকাশ করেন বিদ্বজ্জনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে রাজ্য জুড়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা এবং অশান্তির আবহের মধ্যে শান্তিরক্ষার বার্তা দিলেন পরিবর্তনপন্থী বিদ্বজ্জনদের একাংশ। এক সময় তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলে যাঁদের পরিচয় ছিল, মনোনয়ন পর্বের সন্ত্রাস নিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধেই প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তাঁরা।
বুধবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেদের মতপ্রকাশ করেন বিদ্বজ্জনেরা। এ দিনের প্রেস ক্লাবেই ওই সম্মেলনে হাজির ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার, মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র প্রমুখ। সকলেই ভোট-কেন্দ্রিক হিংসা বন্ধ করে সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানালেন। কাঠগড়ায় তুললেন শাসক দলকেই। বিভাস চক্রবর্তীর মতে, রাজ্য জুড়ে চলা এই রাজনৈতিক হানাহানি ভয়ঙ্কর এবং সুদূরপ্রসারী। তাঁর কথায়, ‘‘মনোনয়নে এত হিংসা হলে ভোটে কী হবে!’’ তাঁর মতে, পশ্চিমবঙ্গে কোনও নির্বাচনই শান্তিপূর্ণ হয়নি। তবে এতটা হিংসা কাম্য নয়। রাজ্য জুড়ে প্রতারণা চলছে বলেও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।
বিদ্বজ্জনদের একাংশের অভিযোগ, বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে বাধা দিচ্ছে শাসক দল। তাঁদের মতে, প্রতিযোগিতাহীন ভাবে জয়টা গণতন্ত্রেরই অপমান। প্রতারণার রাজনীতি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন
বিজেপি-র বিরুদ্ধে এ বার আদালতে তৃণমূলের কল্যাণ
বিদ্বজ্জনদের একাংশের মতে, প্রতিযোগিতাহীন ভাবে জয়টা গণতন্ত্রেরই অপমান। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, পাঁচের দশক থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কখনও শান্তিপূর্ণ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন যদি এমন হিংসাপূর্ণ হয়, তা হলে গণতন্ত্রকে বিকলাঙ্গ বলব।’’ এমন হিংসা তৈরি করছে শাসক দলই, মন্তব্য করেছেন তিনি। একই মত গায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, ‘‘আধিপত্যের চেয়ে বড় বিপজ্জনক কিছু নেই। আধিপত্য গ্রাস করলে মারাত্মক বিপদ।’’ আধিপত্য বিস্তার করে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
এ বার কি প্রত্যাহার করানোর খেলা? সাক্ষাত্কারে কী বললেন কেষ্ট...
অন্য দিকে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার ডাক গিয়েছেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার। কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর মতে, বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকারটুকুও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এ রাজ্যে। মীরাতুনের সঙ্গেই সহমত পোষণ করেছেন সুজাত ভদ্র। তার মতে, ‘‘গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। এটা কখনওই ঠিক হচ্ছে না।’’