চেয়ারম্যান খুনে ক্ষোভ, সামনে এল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

অভিষেক ঘোষণা করেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে খুনিদের। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

মনোজ উপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ডাকাবুকো দলীয় চেয়ারম্যানের খুনের ঘটনায় শুরু হল নতুন করে রাজনীতি।

Advertisement

ভদ্রেশ্বর পুরসভার খুন হওয়া তৃণমূল চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায়কে সৎ বলে সার্টিফিকেট দিলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে এই খুনের নেপথ্যে ‘সাম্প্রদায়িক’ শক্তির যোগ থাকার ঘটনা উড়িয়ে দিলেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও দিনভরের চাপানউতোরে পুলিশ এখনও খুনি সন্দেহে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। দিনের শেষে সাধারণ কর্মীদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতাদের। অভিষেক ঘোষণা করেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে খুনিদের।

রাজনীতির এই ঘোলা জলে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেরী করেননি বিজেপি সভাপতি। ভদ্রেশ্বরের চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কর্মী ছিলেন বলে দাবি করে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মনোজবাবু সৎ ছিলেন। অসৎ কাজের প্রতিবাদ করায় তাঁকে প্রাণ দিতে হল।’’ এ দিন বিধানসভার অধিবেশনের পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘মনোজ দীর্ঘদিনের আরএসএস কর্মী ছিলেন। এ বার বিরাট রামনবমীর মিছিলও বের করেছিলেন। তাঁর ‘জয় ভারত সঙ্ঘ’ নামে একটি স্থানীয় সংগঠন ছিল। সেটি হিন্দুত্বের প্রসার ও প্রচারের কাজ করত।’’ দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘উনি বিজেপিতে আসতে চেয়েছিলেন। হয়তো পুরো পুরসভাটাই বিজেপিতে চলে আসত। সে জন্যই হয়তো তাঁকে খুন করে দেওয়া হল।’’

Advertisement

যা শুনে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিধানসভা চত্বরেই বলেন, ‘‘কী কারণে খুন, জানা যায়নি। ভদ্রেশ্বরের কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। পুরো ঘটনাটাই দুঃখজনক। যে সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন আমাদের গ্রাস করার চেষ্টা করছে তাতে আমাদের দলের ভাল সংগঠকদের সরিয়ে দিতে পারলে তাদের সুবিধা। এরা হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সেটা চলবে না।’’

দিলীপবাবু পাল্টা বলেন, ‘‘মনোজ সৎ মানুষ ছিলেন। তাঁর দলের ভাইয়েরা টাকা কামাচ্ছিল। তিনি তার প্রতিবাদ করায় বলিদান দিতে হল। মনোজের দাদা এখনও আরএসএসের হুগলি জেলার কার্যকর্তা। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই মনোজের খুন হয়েছে বলে দাবি করে। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করুক।’’

এ দিন ভদ্রেশ্বরে যান যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেখানে বলেন, ‘‘সামান্যতমও কারও বিরুদ্ধে সন্দেহ হলে, তাঁর নাম এফআইআরে থাকবে। এই ঘটনায় যারা যুক্ত, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ধরা হবে। এটা আমার দায়িত্ব।’’

পুরভবনে পুরমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তকে নিয়ে যখন বৈঠক বসেছিলেন অভিষেক, সেই সময় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশ আটকাতে গেলে তাঁরা অভিষেকের সঙ্গে কথা বলতে চান। পরিস্থিতি আঁচ করে ওই বৈঠকেই অভিষেক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন