বন্‌ধের দ্বিতীয় দিনেও হামলা, এ বার লক্ষ্য পুলকার

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ ধর্মঘটের সমর্থনে কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট ধরে আসা একটি মিছিল রাজাবাজার মোড়ের কাছে একটি অ্যাপ-ক্যাবের পথ আটকায়। মিছিলের মধ্যে থেকে উইকেট, লাঠি দিয়ে ক্যাবটিতে ভাঙচুর চালানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০২
Share:

ধর্মঘটীদের তাণ্ডবে রাজাবাজারে ভাঙচুর হওয়া সেই পুলকার। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার বামেদের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনে স্কুলবাসে হামলা হয়েছিল বারাসতে। বিভিন্ন মহলের নিন্দা, অভিযুক্তদের গ্রেফতার, প্রশাসনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিতেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হল না। বুধবার, ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে ফের আক্রান্ত হল স্কুলের পুলকার। এ বার খাস কলকাতার বুকে রাজাবাজারে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ ধর্মঘটের সমর্থনে কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট ধরে আসা একটি মিছিল রাজাবাজার মোড়ের কাছে একটি অ্যাপ-ক্যাবের পথ আটকায়। মিছিলের মধ্যে থেকে উইকেট, লাঠি দিয়ে ক্যাবটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। ক্যাবের পিছনেই ছিল রাজাবাজার এলাকার একটি স্কুলের পুলকার। ধর্মঘটীরা এর পরে ওই পুলকারের উপরে চড়াও হন। উইকেট, লাঠি দিয়ে মেরে পুলকারের ‘উইন্ড স্ক্রিন’ ভেঙে দেওয়া হয়। গাড়িতে তখন এক অভিভাবকের পাশাপাশি অন্তত ১৪টি শিশু ছিল বলে পুলিশের দাবি।

ওই অভিভাবক পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি হাত জোড় করে বারবার ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও ধর্মঘটীরা শোনেননি। দলীয় স্লোগান দিতে দিতে শিশু পড়ুয়াদের চোখের সামনেই গাড়িটির কাচ একের পর এক ভেঙে ফেলেন তাঁরা। কাচের টুকরো গিয়ে একটি শিশুর গায়ে লাগে বলেও অভিযোগ। পুলিশ তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শিশুটি এতটাই আতঙ্কিত যে, সে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই বলে জানিয়েছেন তার অভিভাবকেরা। চিকিৎসকেরাও বলছেন, তার ‘ট্রমা’ দ্রুত কাটার নয়।

Advertisement

এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ ২১ জনকে আটক করে। তাঁদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং চার জন মহিলা। তাঁরা নিজেদের সিপিএম কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব বলছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘রাজাবাজারে পুলকারে ভাঙচুর হয়েছে শুনেছি। কোনও ভাবেই উচিত কাজ হয়নি। কারা জড়িত খোঁজ নিচ্ছি।’’ কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুলকার হামলার ঘটনায় এ দিন আটক হওয়া এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছিলাম। হঠাৎ পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। গ্রেফতার করার পরে বলছে আমরা পুলকার ভেঙেছি। আমরা এ কাজ করিনি।’’

রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‘সিপিএম এখন হতাশ একটি রাজনৈতিক দল। সাধারণ মানুষও তাদের উপরে বিরক্ত। এই আচরণ সেই হতাশারই বহিঃপ্রকাশ।’’ কিন্তু প্রশাসন তো বন্‌ধের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার আশ্বাস দিয়ে আমজনতাকে স্বাভাবিক কাজে সামল হতে আর্জি জানিয়েছিল! তার পরেও একের পর এক এই ধরনের নৈরাজ্যের জেরে সাধারণ মানুষের আস্থায় চিড় ধরবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। পুলকারে হামলাকারীদের কড়া শাস্তির দাবিতে এ দিন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় বিক্ষোভ দেখান এক দল তৃণমূলকর্মী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন