ভারতমালা প্রকল্পে রাস্তার কাজ বন্ধ উত্তর ২৪ পরগনায়

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ নভেম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে কাজ স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন। জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে স্থানীয় স্তরে প্রতিরোধ আসার ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share:

জমি আন্দোলনের জেরে যশোর রোডের বিকল্প রাস্তা তৈরি আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। থমকে রয়েছে ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। এ বার জমি আন্দোলনের জেরে থমকে গেল কেন্দ্র সরকারের ‘ভারতমালা প্রকল্পে’ সীমান্তবর্তী এলাকায় জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ নভেম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে কাজ স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছেন। জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে স্থানীয় স্তরে প্রতিরোধ আসার ফলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।

উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওই চিঠি পাওয়ার পরে ৩০ নভেম্বর থেকে আপাতত ভারতমালা প্রকল্পে সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ১৮ জন অফিসার ও কর্মীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

বাগদা থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত এবং গাইঘাটার সীমান্ত এলাকা দিয়ে বসিরহাট পর্যন্ত সড়ক তৈরির কথা ছিল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো, যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী এলাকায় দ্রুত সেনাবাহিনী পৌঁছে যাওয়া ছিল এই রাস্তা
তৈরির লক্ষ্য।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাস্তার জন্য জমি চিহ্নিত করে সমীক্ষা চলছিল। কৃষিজমি অধিগ্রহণের কথা ছিল। তাতেই তৈরি হয় সমস্যা। আন্দোলন সংগঠিত করেন চাষিরা। গাইঘাটার ঝাউডাঙায় তৈরি হয়, ‘ঝাউডাঙা অঞ্চল কৃষিজমি রক্ষা কমিটি’। কমিটির সদস্য তপনকুমার বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘আমরা এখনও চাই সড়ক তৈরি হোক। কিন্তু সেটা তিন বা চার ফসলি জমি বাদ দিয়ে।’’ মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনিক নানা স্তরে স্মারকলিপি দেয় কমিটি। বাগদা ও স্বরূপনগরেও চাষিরা বিরোধিতায় নামেন।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জমি অধিগ্রহণের জন্য উত্তর ২৪ পরগনায় প্রয়োজন ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা বরাদ্দ নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়।

বাম আমলে যশোর রোডের বিকল্প রাস্তা তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেছিল তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল। যার জেরে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে
যায়। ভারতমালা প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপরেও থমকে গেল কাজ।

রাস্তা তৈরি আটকে যাওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। জমির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কেন্দ্রের প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়া নতুন নয়। রাজ্যকে হেয় করার জন্য, উন্নয়ন আটকে দেওয়ার জন্যই এমন করা হয়েছে।’’ অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার জমি দিতে পারেনি বলেই কাজ বন্ধ হয়ে গেল। এতে কেন্দ্রের কোনও দোষ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন