Anubrata Mondal

দুষ্কৃতী-তাণ্ডব ও পুলিশের উপর হামলায় নাম জড়াল অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিধায়কের! কী বললেন শাসকনেতা?

বীরভূমের সিউড়িতে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব এবং পরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় নাম জড়াল অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪২
Share:

সিউড়ির ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডল-ঘনিষ্ঠ বিধায়কের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

বীরভূমের সিউড়িতে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব এবং পরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় নাম জড়াল অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর। মঙ্গলবারের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ইয়াসিন আনসারিই একটি ভিডিয়োবার্তায় বিকাশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

তৃণমূল বিধায়ক অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মঙ্গলবারের ঘটনা নিছকই দুই গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ বিবাদ। এর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। এক জন অভিযুক্তের করা অভিযোগ সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত।’’

পুরনো জমি বিবাদকে ঘিরে মঙ্গলবার অশান্ত হয়ে উঠেছিল মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের নহোদরী গ্রাম। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বহিরাগত দুই যুবক গ্রামে ঢুকে ক্লাবে থাকা কয়েক জনকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। ওই দুই যুবককে ধরে পাল্টা মারধর করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকর্মীদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। থানার আইসি-র কলারে হাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ইয়াসিনের দিকে আঙুল তুলেছেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, ইয়াসিনের সঙ্গে এলাকার যুব তৃণমূল নেতা বাবু আনসারির দীর্ঘ দিনের বিবাদ। তার জেরেই ইয়াসিনের দুই তুতো ভাই রসুলুদ্দিন আনসারি ও মাল্লু আনসারি বন্দুক হাতে হামলা চালান বলে অভিযোগ। বাবু, রসুলুদ্দিন, মাল্লু-সহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিউড়ি থানার পুলিশ। বুধবার ধৃতদের সিউড়ি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত রসুলুদ্দিন এবং আইসি-র কলার ধরে হেনস্থার অভিযোগে ধৃত আমির আনসারির দশ দিনের হেফাজত চেয়েছিল পুলিশ। আদালত সাত দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে। বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে।” ইয়াসিন এখনও পলাতক।

এরই মধ্যে একটি ভিডিয়োবার্তায় ইয়াসিন দাবি করেছেন, তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাণ্ডবের ‘মিথ্যা’ অভিযোগ তোলা হয়েছে এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ করেন ইয়াসিন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিকাশ রায়চৌধুরী ওই এলাকায় একটি বেআইনি ব্যবসার মূল কারিগর। তাঁর মদতেই বাবু আনসারি সেখানে প্রভাব বিস্তার করেন এবং কোটি কোটি টাকার কারবার চলে। ষড়যন্ত্র করে আমাদের ফাঁসিয়েছেন বিধায়ক।’’

ভিডিয়োবার্তায় ইয়াসিনের দাবি, তিনি গত চার মাস ধরে ঝাড়খণ্ডে আছেন। তাঁর ভাইয়েরা মঙ্গলবার গ্রামের যাওয়ার কথা বললে তিনি বারণ করেন। কিন্তু ভাইয়েরা শোনেননি। এর পরেই তৃণমূল নেতা বাবু আনসারি ও তাঁর দলবল তাঁর দুই ভাইকে মারধর করে বলে ইয়াসিনের অভিযোগ। দুই ভাই অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়লে তাঁদের কোমরে বন্দুক ও পকেটে গুলি ভরে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন ইয়াসিন।

বিষয়টি নিয়ে বুধবার মুখ খুলেছিলেন অনুব্রত। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সিউড়ির আইসি খুব ভাল লোক। উনি ন্যায্য কাজ করছেন। কোনও রং দেখার দরকার নেই। আইসি-র কলার ধরা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement