চুপ কেন সুরেন্দ্র, বিঁধলেন গুরুঙ্গ

কিন্তু গুরুঙ্গরা যে বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল তাঁর এ দিনের বক্তব্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে পুলিশ অত্যাচার চালাচ্ছে। দিল্লিতে এই কথা তুলে ধরার দায়িত্ব সাংসদের। তিনি সেই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করুন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪৫
Share:

দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে এ বার ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করালেন খোদ বিমল গুরুঙ্গ। আগামিকাল নয়াদিল্লিতে বসতে চলেছে গোর্খা আন্দোলন সমন্বয় কমিটির (জিএমসিসি) বৈঠক। তার আগে পাতলেবাসে বসে মোর্চা প্রধান অভিযোগ করেন, গোর্খাল্যান্ড বিষয়টি নিয়ে অহলুওয়ালিয়া সংসদে সরব হচ্ছেন না।

Advertisement

সম্প্রতি অহলুওয়ালিয়ার নামে পাহাড়ে নিখোঁজ ডায়েরি করে জিএনএলএফ। সেই নিয়ে মোর্চার সঙ্গে তাদের মনোমালিন্যও হয়। বিজেপির প্রার্থী হিসেবে অহলুওয়ালিয়াকে সমর্থন দিয়েছিল মোর্চা। তার পরেও কেন তিনি পাহাড়ের হয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলে জিএনএলএফ। সেই সময়ে মোর্চা নেতৃত্ব এই খোঁচার পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: পরিস্থিতি দেখে যান মুখ্যমন্ত্রী: গুরুঙ্গ

Advertisement

কিন্তু গুরুঙ্গরা যে বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল তাঁর এ দিনের বক্তব্য। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে পুলিশ অত্যাচার চালাচ্ছে। দিল্লিতে এই কথা তুলে ধরার দায়িত্ব সাংসদের। তিনি সেই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করুন।’’

মোর্চার অন্দরের খবর, তাঁরা আশা করেছিলেন, সংসদে দার্জিলিং প্রসঙ্গ তুলে ধরবেন অহলুওয়ালিয়া। সেই মতো সাংসদকে অনুরোধও করা হয়। মোর্চার এক নেতার কথায়, ‘‘সাংসদ সে অনুরোধ শোনেননি।’’ মোর্চার ধারণা, বারবার পাহাড় প্রসঙ্গ সংসদে উঠলে রাজ্যের উপরে চাপ বাড়ত।

অহলুওয়ালিয়া এই নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার দাবি, ‘‘অহলুওয়ালিজি যথেষ্ট অভিজ্ঞ সাংসদ। উনি নিজের ভূমিকার কথা জানেন, বোঝেন এবং সেটি যথাযথ ভাবে পালনও করছেন।’’

ঘটনাচক্রে, এ দিন সংসদে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও নিখোঁজ ডায়েরির প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দেন অহলুওয়ালিয়াকে। এবং বিজেপি সাংসদকে দার্জিলিঙে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। ক্ষুব্ধ অহলুওয়ালিয়া পাল্টা বলেন, সৌগতবাবু নিশ্চয় অন্ধ হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁকে চোখের সামনে দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না। পরে ঘনিষ্ঠমহলে অহলুওয়ালিয়ার অভিযোগ, নিজেদের ভুল নীতির ফলেই দার্জিলিং পরিস্থিতি এখন রাজ্য সরকারের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। তবে দিল্লির কেউ কেউ মনে করছেন, সৌগত এই ভাবে সংসদে বিষয়টি তুলে দেওয়ায় আখেরে হয়তো গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আন্দোলনকারীরাই সুবিধা পাবে।

দার্জিলিং প্রসঙ্গ এ দিন রাজ্যসভাতেও ওঠে। এনসিপি সাংসদ মজিদ মেমন বলেন, ‘‘আট সপ্তাহ ধরে ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষ ভীষণ ভাবে সমস্যায় পড়েছেন। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকার কারণে নিষ্পেষিত হচ্ছেন পাহাড়ের মানুষ।’’ তিনি অবিলম্বে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন।

মজিদের মতোই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তুলে চাইছে জিএমসিসি-ও। সংগঠনের এখন একটাই দাবি, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে অবিলম্বে তৎপর হোন নরেন্দ্র মোদী-রাজনাথ সিংহেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন