কেন্দ্র-রাজ্যের উপরে চাপ বাড়াতে রোজই নতুন কিছু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিমল গুরুঙ্গ। আবার রোজই গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে তাঁর সহযোগী দলগুলি পাল্টা চাপ বাড়াচ্ছে। তাতে চাপে পড়ে সুর বদলাতে হচ্ছে গুরুঙ্গকে।
শনিবার যেমন গোর্খা রাষ্ট্রীয় নব নির্মাণ মোর্চার সভাপতি দাওয়া পাখরিন স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আন্দোলনটা গোর্খাল্যান্ড নিয়ে হচ্ছে বলেই ওদের (মোর্চার) সঙ্গে আছেন। তিনি বলেন, ‘‘গুরুঙ্গ বলছেন, বাকি দলগুলিকে ওঁর পিছনে চলতে হবে। আমি গুরুঙ্গের পিছনে চলার লোক নই। সকলকে সম্মান না দিলে একসঙ্গে চলার প্রশ্ন নেই।’’ এই চাপে এ দিন বিকেলেই গুরুঙ্গকে বলতে হয়েছে, ‘‘কাউকে অসম্মান করিনি। সকলে মিলেমিশে এগোচ্ছি।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুক্রবার জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিঙ্গও জানিয়েছিলেন, পাহাড়ে জন আন্দোলন শুরু হয়েছে, তাতে কেউ নিজেকে নেতা বলে দাবি করলে হবে না। আবার কেউ মাঝপথে আন্দোলন ছেড়ে গেলে পাহাড়বাসীও ছেড়ে দেবেন না। এর এক দিনের মধ্যে পাখরিনের মন্তব্য। গোর্খাল্যান্ডের দাবি সামনে রাখলেও পাহাড়ে অন্য দলগুলি যে নানা ভাবে মোর্চার অস্বস্তি বাড়াচ্ছে, দলেরই অনেকেই তা মেনে নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:রাজ্যে নয়, নামে না দিলীপের
ঘরে-বাইরে চাপে সকালের সিদ্ধান্ত বিকেলে বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন গুরুঙ্গ। যেমনই এ দিনই সকালে তিনি জানিয়েছিলেন, সকলে প্রথাগত পোশাক ও খুকুরি নিয়ে মিছিলে অংশ নেবেন। কিন্তু কয়েক হাজার সমর্থক দার্জিলিঙের জেলাশাসকের দফতরের সামনে যখন জমা হন, তখন কারও সঙ্গে খুকুরি ছিল না। দল সূত্রে খবর, শেষ মুহূর্তে গুরুঙ্গই খুকুরি না-রাখার নির্দেশ দেন। চাপ রয়েছে রাজ্যেরও। প্রশাসন চাইছে, মোর্চা বন্ধ প্রত্যাহার করুক। নবান্ন সূত্রে বলা হয়েছে, শিলিগুড়িতে সর্বদল বৈঠক ডেকে মোর্চাকে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগ প্রত্যাখ্যান করায় বাহিনী তোলা হবে না।
গুরুঙ্গ এ দিনও পাতলেবাসে বসে হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘যত বাধাই আসুক, আমরা আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমৃত্যু লড়তে আমি প্রস্তুত।’’ তাঁর এ দিনের প্রাপ্তি, কালিম্পঙের দুই তৃণমূল কাউন্সিলর ভীম অগ্রবাল ও আসিফ আনসারির মোর্চায় যোগ দেওয়া।
জিটিএ থেকে একমাত্র রোশন গিরির ইস্তফাপত্রই শুধু নবান্নে এসেছে। নজর রাখছে কেন্দ্রও। জিটিএ-র সকলের ইস্তফা রাজ্যপালের কাছে জমা পড়ার খবর সরকারি ভাবে না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র এই নিয়ে কিছু বলবে না বলেই সরকারি সূত্রের দাবি।