মুখ: বিমল গুরুঙ্গ। মঙ্গলবার দার্জিলিঙে। —এএফপি
যে হারে চাল-ডাল-আনাজের সঙ্কট তীব্র হচ্ছে, তাতে বন্ধ কত দিন চালানো যাবে তা নিয়ে টানাপড়েনের সুর ধরা পড়ল খোদ বিমল গুরুঙ্গের কথাতেও। মঙ্গলবার বিকেলে দার্জিলিঙের পাতলেবাসে বসে তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো টানা বন্ধ চালিয়ে যেতে চাই। কিন্তু, আমাদের সঙ্গে পাহাড়ে যে সব দল রয়েছে, তারা কী বলে, সেটাও ভাবতে হবে। ৬ জুলাই সর্বদল বৈঠকে আলোচনার পরেই সব স্পষ্ট হবে।’’
অনির্দিষ্টকালের বন্ধ তুলে নেওয়ার জন্য ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে রয়েছে মোর্চা। একে তো পাহাড়ের ভাঁড়ার ক্রমেই খালি হচ্ছে। অন্য দিকে, জিএনএলএফ ও হরকা বাহাদুরের দল ক্রমাগত বন্ধ তুলতে চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গুরুঙ্গের কথা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। একই সঙ্গে তিনি জানান, শর্তসাপেক্ষে আলোচনাতেও তাঁরা রাজি। গুরুঙ্গের কথায়, ‘‘দিল্লি যাওয়ার বার্তা পেয়েছি। সব খোলসা করে বলছি না। তবে আমাকে আলোচনার জন্য ডাকা হলেও কী নিয়ে আলোচনা হবে, সেটা বলা হয়নি। তাই আপাতত যাব না। কারণ, একমাত্র গোর্খাল্যান্ডের দাবির ব্যাপারে কথা হবে বললেই আমি যাব।’’ একই সঙ্গে মন ঘিসিঙ্গের দলের উপরে পাল্টা চাপ দিতে গুরুঙ্গ জানান, তাঁদের সঙ্গে আন্দোলনে সামিল হলেও জিএনএলএফের ভূমিকা নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা এখনও ষষ্ঠ তফসিলের দাবি থেকে সরেনি। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগও রয়েছে। জিএনএলএফকে সর্বদল বৈঠকের আগেই লিখিত ভাবে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।’’ শুধু গুরুঙ্গই নন, মন ঘিসিঙ্গ যাতে উত্তরবঙ্গ ক্রীড়া উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন, সে জন্য আগেই আর্জি জানান মোর্চা নেত্রী বিনীতা রোকা।
এ দিন সকাল থেকে জেলাশাসকের দফতরে মাইকে নেপালি গান বাজানো হচ্ছে। তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মোর্চা নেতৃত্ব। বিনীতা বলেন, ‘‘ক’দিন থেকে দেখছি জেলাশাসক ভুটিয়াদের প্রথাগত পোশাক পরে অফিস করছেন। সেখানে কেউ গেলে খাদা পরিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন। নেপালি গানও বাজানো হচ্ছে ডিএম অফিসে। এর মানে কি!’’
এর জবাব দিতে গিয়ে দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত কিন্তু গুরুঙ্গদের বন্ধ তুলে আলোচনায় বসারই বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কে কী পরবেন, কে কী গান শুনবেন, তা নিয়ে ভাবার চেয়ে মোর্চা নেতারা বন্ধে পাহাড়ের মানুষের সমস্যার কথা ভাবুন। এবং দয়া করে বন্ধ তুলে আলোচনায় বসার কথা ভাবুন।’’