পাহাড়ে বিতর্কিত পোস্টার, বিপাকে গুরুঙ্গ

গোর্খাল্যান্ডের দাবি তো ছিলই। তার সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে নতুন এক পোস্টার। সেই পোস্টারে যা লেখা হচ্ছে তার মর্মার্থ হচ্ছে, অ-নেপালিভাষীরা ডিসেম্বরের মধ্যে পাহাড় ছাড়ুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪০
Share:

ফাইল চিত্র।

গোর্খাল্যান্ডের দাবি তো ছিলই। তার সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে নতুন এক পোস্টার। সেই পোস্টারে যা লেখা হচ্ছে তার মর্মার্থ হচ্ছে, অ-নেপালিভাষীরা ডিসেম্বরের মধ্যে পাহাড় ছাড়ুন। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের দিকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে আর এক দিন পরেই পাহা়ড়ে পৌঁছচ্ছেন, তখন এমন পোস্টারে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে পাহাড়ের বিরোধী দলগুলি।

Advertisement

পাহাড়ের ব্যবসায়ীরাও আশঙ্কা করছেন, এমন পোস্টারে হাওয়া গরম হয়ে উঠতে পারে। আর তার আঁট লেগে ব্যাহত হতে পারে পুজোর মরসুম। মোর্চার অন্দরেও ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। আর তার আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি আসরে নামতে হয়েছে বিমল গুরুঙ্গকে। গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলা পোস্টারটি নিজেদের বলে মেনে নিলেও অন্যটি সম্পর্কে কড়া অবস্থান নেওয়ারই চেষ্টা করেছেন তিনি। এক দিকে এই নিয়ে এফআইআর করেছেন। অন্য দিকে সাংবাদিকদের ডেকে জানিয়েছেন, অ-নেপালি লোকজনকে পাহাড় ছাড়ার হুমকি তাঁরা দেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে — দাবি করেছেন গুরুঙ্গ। তিনি এও বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে সব মানুষ শান্তিতে বসবাস করেন। সেটাই পাহাড়ের নীতি। কারা এ সব করছে, পুলিশ তাদের খুঁজে বার করে শাস্তি দিক। সে জন্য এফআইআর করেছি।’’

গোর্খাল্যান্ডের দাবি বা অ-নেপালিদের পাহাড় ছাড়ার হুমকি— সব কিছু নিয়েই বিশদে তথ্য সংগ্রহ করেছে নবান্ন। দার্জিলিং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দার্জিলিঙের এসপি অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘পোস্টারের বিষয় নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। সব দলের সঙ্গে বৈঠক করে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে বলছি।’’ রবিবার যুব মোর্চার ৮ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

Advertisement

পাহাড়ের বিরোধী দলগুলির দাবি, সব পোস্টার মোর্চাই দিয়েছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে বলেই এ সব করছে তারা। হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে এখন পাহাড় হাসছে। আর তখনই সেখানে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে। এর জবাব মানুষ দেবেন।’’ বিরোধীদের বক্তব্য, বস্তুত মানুষ ভোটবাক্সে জবাব দিতে শুরু করেছেন। তাই সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে পাহাড়ের তিন আসনেই জয়ের ব্যবধান অনেকটা কমেছে মোর্চার। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক ও কার্শিয়াং পুরসভার বহু ওয়ার্ডে ওরা পিছিয়ে। এ বছরের শেষেই পাহাড়ে পুরসভা ও জিটিএ-র ভোট। হরকার দল, জিএনএলএফ-এর সঙ্গে জোট করলে তৃণমূল বহু আসনে মোর্চাকে কাবু করতে পারে।

সেই ভয়েই কি এমন সব হুমকি-হুঁশিয়ারি? মোর্চা নেতৃত্বের মুখে আপাতত ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব ছাড়া কোনও জবাব নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন