ধর্মগুরুর নির্দেশে বন্‌ধে অনড় গুরুঙ্গ

এই ধর্মগুরু কে, সে সম্বন্থে অবশ্য মুখে কুলুপ সকলেরই। প্রকাশ্যে সে কথা কেউই বলতে চান না। তবে মোর্চারই একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনেক দিন ধরেই এই ‘বাবা’র সঙ্গে গুরুঙ্গের ভাল সম্পর্ক। মোর্চার কিছু নেতা জানাচ্ছেন, ‘বাবা’ তন্ত্রচর্চা করেন। সাধারণত নেপালের কাঠমান্ডুতে থাকেন।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১১
Share:

বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

নব্বইয়ের আগে নড়বেন না গুরুঙ্গ—পাহাড়ে পাকদণ্ডীতে পাক খাচ্ছে এমন কথা। মোর্চার কিছু নেতাই একান্তে বলছেন, বন্‌ধ ৯০ দিনে পড়লে তবেই তা তুলতে রাজি হবেন গুরুঙ্গ। আর তার পিছনে রয়েছে গুরুঙ্গের খুব বিশ্বাসভাজন কোনও এক ধর্মগুরুর নির্দেশ।

Advertisement

এই ধর্মগুরু কে, সে সম্বন্থে অবশ্য মুখে কুলুপ সকলেরই। প্রকাশ্যে সে কথা কেউই বলতে চান না। তবে মোর্চারই একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনেক দিন ধরেই এই ‘বাবা’র সঙ্গে গুরুঙ্গের ভাল সম্পর্ক। মোর্চার কিছু নেতা জানাচ্ছেন, ‘বাবা’ তন্ত্রচর্চা করেন। সাধারণত নেপালের কাঠমান্ডুতে থাকেন। তবে দার্জিলিং পাহাড়ে তাঁর অনেক শিষ্য রয়েছেন। সেই কারণে তিনি কখনও কখনও কালিম্পঙেও এসে থাকেন। সেখানে যাগযজ্ঞ করেন।

গুরুঙ্গকে কাঠমান্ডু ও কালিম্পঙে তাঁর কাছে যেতে দেখেছেন অনেকে। গুরুঙ্গর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ‘বাবা’ই মোর্চা সভাপতিকে বলেছেন বন্‌ধ টানা ৯০ দিন ধরে চালিয়ে যেতে। তা হলেই গুরুঙ্গ আন্দোলনে সাফল্য পাবেন। তাই কারও কথাতেই নব্বইয়ের আগে গুরুঙ্গ বন্‌ধের সিদ্ধান্ত নড়চড় করতে রাজি হননি।

Advertisement

পাহাড়ের মানুষ আগেও এমনটা দেখেছেন। জিএনএলএফের অন্দরের খবর, একদা সুবাস ঘিসিঙ্গ এক জন ধর্মীয় গুরুর কথায় অনেক সিদ্ধান্ত নিতেন। জিএনএলএফের অন্দরে তাঁকে অনেকে সসম্ভ্রমে ‘অ্যান্টেনা বাবা’ বলতেন। ওই ‘বাবা’ অ্যান্টেনার ভঙ্গিমায় হাত তুলে আশীর্বাদ করতেন। ঘিসিঙ্গের অনেক গুণই গুরুঙ্গ আয়ত্ত করেছেন। দু’জনের উত্থান ও আন্দোলনের ধরও অনেকটা এক। ঘিসিঙ্গের মতো গুরুঙ্গও খুবই ধর্মপ্রাণ।

আরও পড়ুন: নরেন্দ্রর পথেই, দাবি মোদীর

ঘিসিঙ্গ যেমন শ্রদ্ধা করতেন ‘অ্যান্টেনা বাবা’কে, গুরুঙ্গও তেমন তাঁর গুরুকে শ্রদ্ধা করেন। মোর্চার অনেকেই জানান, ওই গুরুর নির্দেশে জামুনিতে গুরুঙ্গ কিছু দিন টানা পুজোপাঠও করেছেন। যা শোনার পরে জন আন্দোলন পার্টির সভাপতি হরকাবাহাদুর ছেত্রীর মন্তব্য, ‘‘এটা কতটা সত্যি তা বলতে পারব না। তবে রাজনীতি ও ধর্মকে গুলিয়ে ফেলাটা কখনও ঠিক নয়।’’

মোর্চা সভাপতি অন্তরালে। তাঁর একান্ত ঘনিষ্ঠ রোশন গিরি দিল্লিতে রাজনৈতিক দূত হিসেবে গিয়ে আর ফেরেননি। তাঁর ফোনও দুদিন ধরে বন্ধ। শুক্রবার বিকেলের পরে হোয়াটস অ্যাপ খোলেননি।

কিন্তু কাকতালীয় ভাবে সেই নব্বই দিন পেরোচ্ছে আজ, মঙ্গলবার। এ দিনই উত্তরকন্যায় রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে মোর্চার বৈঠক। পাহাড়ের আশা এ বার, গুরুঙ্গ বন্‌ধ নিয়ে অনমনীয় মনোভাব থেকে নড়ে বসবেন। যে কথা শুনে বিনয় তামাঙ্গ শুধু হাসলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন