উত্তরকন্যার বৈঠকে বরফ গলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ বার তিক্ততা ভুলে দুই পাহাড়ের সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে গ্যাংটক যাচ্ছেন বিনয় তামাঙ্গ।
মঙ্গলবার সিকিমের রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং এর সঙ্গে বৈঠক করবেন বিনয়। জিটিএ-এর একটি প্রতিনিধি দলও যাচ্ছেন সিকিমে। পরিকাঠামো উন্নয়নের বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে দু’তরফে কথা হবে বলে জানানো হয়েছে।
পাহাড়ে দীর্ঘ আন্দোলন, গুরুঙ্গের অন্তর্ধান ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে চামলিঙ গুরুঙ্গের পাশে দাঁড়ানোয় সিকিমের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় মোর্চার। জিটিএ-এর দায়িত্ব নেওয়ার পরে বিনয় তামাঙ্গ একাধিকবার সিকিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। জিটিএ-এর দায়িত্ব নেওয়ার পরে সুকনায় প্রথম বড়মাপের জনসভায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বিনয় তামাঙ্গ বলেছিলেন, ‘‘সিকিম যে ভাষা বুঝবে তাতেই উত্তর দেব।’’
এর পরে অবশ্য পরিস্থিতি বদলায়। গত ১৬ মার্চ উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন চামলিং। সেই বৈঠকেই স্থির হয় জিটিএ-র প্রতিনিধিরা সিকিমে যাবেন। সেখানেই পরবর্তী আলোচনা হবে।
শনিবার জিটিএ-এর চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গও শিলিগুড়ির বৈঠকের সূত্র ধরে বলেন, ‘‘উত্তরকন্যার বৈঠকে একটা রাস্তা খুলে গিয়েছে। আর কোনও তিক্ততা নেই। আগামী ২৭ মার্চ গ্যাংটকে গিয়ে বৈঠক করব। সিকিম এবং দার্জিলিং দুই পাহাড়ি এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হবে। এই রাস্তা তৈরি করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ।’’
মোর্চার দাবি, উত্তরকন্যার বৈঠকের পরে সিকিমের ভূমিকা সদর্থক। আত্মগোপন করে থাকা গুরুঙ্গ অনুগামীদের খুঁজতে সিকিম সীমান্তে অভিযান চালাচ্ছে রাজ্য পুলিশ। তাতে সিকিম প্রশাসন সাহায্য করছে। এখনও গুরুঙ্গ অনুগামী অনেকেই সিকিমে লুকিয়ে রয়েছে বলে বিনয়দের দাবি। সে বিষয়ে একটি নথিও চামলিঙের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত রেলপথের কাজ জমি- সহ আরও নানা সমস্যায় আটকে রয়েছে। এই রেলপথ চালু হলে পর্যটনের ফায়দা মিলবে দুই পাহাড়েই। তাই বিষয়টি নিয়ে যৌথভাবে কেন্দ্রের কাছে সওয়াল করার প্রস্তাব নিয়েছে জিটিএ এবং সিকিম সরকার। সে ক্ষেত্রে এই প্রথম দুই পাহাড়ি প্রশাসনের কাছাকাছি আসা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বিনয় বলেন, ‘‘সেবক-রংপো রেলপথে মল্লি, তিস্তাবাজার, কালিঝোরা এবং রম্ভি এই চার জায়গায় স্টেশন তৈরি হওয়া প্রয়োজন। আশা করছি দ্রুত এই রেলপথের কাজ শুরু হবে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে কথাও চলছে।’’
জৈব চাষ থেকে শুরু করে পানীয় জল সরবরাহে কারিগরি সহায়তার মতো বিষয়েও কথা হতে পারে বলে জিটিএ সূত্রের খবর।