সন্দেশখালি পরিদর্শনে দু’দলেরই প্রতিনিধিরা
Sandeshkhali

‘গন্ডগোলটা আর রাজনৈতিক নেই’ দাবি বিজেপির, সুপারি কিলার দিয়ে খুন, পাল্টা জ্যোতিপ্রিয়র

বিজেপির প্রতিনিধি দলেসাংসদ দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি রয়েছেন আরও চার সাংসদ। অর্জুন সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুর, জগন্নাথ সরকার। এ ছাড়া রয়েছেন দলের দুই নেতা রাহুল সিংহ ও সায়ন্তন বসু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ১৪:০৩
Share:

লকেট চট্টোপাধ্যায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র

চার রাজনৈতিক কর্মী খুনের পর আজ রবিবার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু সন্দেশখালিবিজেপি এবং তৃণমূল উভয় দলেরই প্রতিনিধিরা যাচ্ছেন এলাকা পরিদর্শনে। বিজেপির তরফে যাচ্ছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ ৭ জনের প্রতিনিধি দল। গোটা ঘটনার দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেবিজেপি। একই সঙ্গে লকেটের দাবি, ‘গন্ডগোলটা আর রাজনৈতিক নেই, সাম্প্রদায়িক’ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সুপারি কিলার এনে খুন করছে বিজেপি। সব মিলিয়ে শোকের আবহেও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ-রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনায় সরগরম গোটা এলাকা।

Advertisement

শনিবার সন্দেশখালির হাটগাছিয়ার ভাঙ্গিপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। উভয় দলই একে অন্যের উপর হামলার দায় চাপানোর চেষ্টা যেমন চালাচ্ছে, তেমনই হতাহত ও নিখোঁজের সংখ্যা নিয়েও দাবি-পাল্টা দাবি চলছে। গোটা এলাকায় আতঙ্কের ছাপ। তার মধ্যেই আজ সন্দেশখালি যাচ্ছেন বিজেপি ও তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা।

বিজেপির প্রতিনিধি দলেসাংসদ দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি রয়েছেন আরও চার সাংসদ। অর্জুন সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুর, জগন্নাথ সরকার। এ ছাড়া রয়েছেন দলের দুই নেতা রাহুল সিংহ ও সায়ন্তন বসু। হাটগাছিয়ায় নিহত দলীয় কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ভাঙ্গিপাড়া-সহ পুরো এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন বিজেপি প্রতিনিধিরা।

Advertisement

শনিবারের খুনোখুনির পর থেকেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব বিজেপি। এমনকি, পুলিশ মৃতদেহ লোপাটের চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে দলের তরফে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ নিয়ে জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও একটি সূত্রে খবর। ঘটনার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। এ দিনের পর্যবেক্ষণের পর কেন্দ্রকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে খবর।

অন্য দিকে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুগলির সাংসদ বলেন, ‘‘সন্দেশখালির বিষয়টা কিন্তু আর শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেই। লক্ষ্য করে দেখুন, লড়াইটা শুধু তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে নয়। পরিস্থিতিটা সাম্প্রদায়িক জায়গায় চলে গিয়েছে।’’ এর সঙ্গেই পুরো পরিস্থিতির দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই চাপিয়েছেন লকেট। তাঁর তোপ, ‘‘মমতা এখন বদলার রাজনীতি শুরু করেছেন। মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে মানুষের উপর আক্রমণ হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে গুলি করে মারা হচ্ছে। ১৮টা আসনে হারের ধাক্কা উনি নিতে পারছেন না। চলে যাওয়ার আগে বাংলায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে যেতে চাইছেন।’’রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর কথায়, ‘‘এই প্রত্যেকটা মৃত্যুর দায় মমতাকে নিতে হবে। যদি দায় নিতে না পারেন, তাহলে পদত্যাগ করুন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারঅবশ্যই হস্তক্ষেপ করবে।’’

বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা সুপারি কিলার দিয়ে খুনের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতিজ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনিও এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। নিহত দলীয় কর্মী কায়ুম মোল্লা এবং ‘নিখোঁজ’ কর্মীদের বাড়িতেও যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। জ্যোতিপ্রিয় এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের দলের ছ’জন এখনও নিখোঁজ। তাঁদের খুঁজে পাচ্ছি না। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। যে দলেরই কর্মী মারা যাক, সেটা মৃত্যুই। বিজেপি কেন এসব করছে জানি না। আমরা কোথাও মিটিং-মিছিল করছি না। বিজেপি সুপারি কিলার ভাড়া করে এনে খুন করছে। ওরা কী চায়, বুঝতে পারছি না।’’

আরও পড়ুন: ‘স্যর ছেলের দেহটা খুঁজে দিন’, কাতর আর্তি বাবার, ধমক দিয়ে পুলিশ বলল, ‘ভেড়ির কাদা জলে নামতে পারব না!’

আরও পডু়ন: বিজয় মিছিল আটকে রক্তগঙ্গা গঙ্গারামপুরে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন