উপ-নির্বাচনের আগে দাবি দিলীপ, অজিতের

নির্ঘণ্ট অজানা, প্রার্থী চূড়ান্ত!

গত বিধানসভায় এই শহর থেকে জিতেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরে লোকসভাতেও তিনি জয়ী হয়ে খড়্গপুরে উপ-নির্বাচন আসন্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

রেলশহরে উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা এখনও হয়নি। তবে যুযুধান সব রাজনৈতিক দলই জানাচ্ছে, প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত!

Advertisement

গত বিধানসভায় এই শহর থেকে জিতেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরে লোকসভাতেও তিনি জয়ী হয়ে খড়্গপুরে উপ-নির্বাচন আসন্ন। আগামী দু’দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে নির্বাচনের নির্ঘন্ট। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার খড়্গপুরে সঙ্কল্প যাত্রার দ্বিতীয় দিনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি উপ-নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে প্রশ্নের জবাবে স্পষ্টই বললেন, “সব আগে থেকে ঠিক হয়ে আছে। নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলেই আমাদের প্রার্থী ঘোষণা হয়ে যাবে।”

গত লোকসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র খড়্গপুর শহরেই ৪৫ হাজার ভোটের ‘লিড’ ছিল বিজেপির। সেই মার্জিন ধরে রাখাই উপ-নির্বাচনের গেরুয়া শিবিরের চ্যালেঞ্জ। দিলীপ নিজে প্রার্থী হিসেবে কারও নাম মুখে আনেননি। তবে দলের অন্দরে ভাসছে একাধিক নাম। দাবি উঠছে, বাইরের কেউ নয়, শহরের কাউকে প্রার্থী করা হোক। সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থীর নাম উঠে আসায় গেরুয়া শিবিরে ভাঙনেরও আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও দিলীপ বলছেন, “দলের সংসদীয় কমিটিই যোগ্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে।” উপ-নির্বাচনে জয়ের ধারা বজায় থাকবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Advertisement

রেলশহরে বিজেপির জয়যাত্রা রুখে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তৃণমূলও। প্রার্থীর নাম নিয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করছে রাজ্যের শাসক দল। তবু একাধিক নাম ভাসছে ঘাসফুলের শিবিরেও। এখানেও রয়েছে শহরের নেতাদের প্রার্থী করার দাবি। খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে রেলশহরে সংগঠনের রাশ ধরেছেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর বারবার ছুটে আসা, দফায় দফায় বৈঠক করা, একগুচ্ছ নির্দেশেও অবশ্য শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানা যায়নি।

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দল প্রার্থী ঘোষণার আগেই শহরের দুই তৃণমূল নেতার অনুগামীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করছে। এ ক্ষেত্রে যে কোনও একজন বাদ পড়লেই দলে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নেতারা। শহরের পাঁচ নেতা তথা কাউন্সিলর বাদে শহরের বাসিন্দা এক জেলা নেতার নাম সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় উঠে আসছে। এমনকি ওই জেলা নেতাকে পুজোর উদ্বোধনে এসে শুভেন্দু অধিকারী ‘ভূমিপুত্র’ বলে সম্বোধন করায় জল্পনা আরও জোরাল হয়েছে। আবার মিশ্র সংস্কৃতির শহরের জন্য জেলার বাইরের এক অবাঙালি প্রার্থীর নামও তৃণমূলের অভ্যন্তরে ঘোরাফেরা করছে।

এই অাহে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “আমাদের দল প্রার্থী ঠিক করে রেখেছে। দল যাঁকে প্রার্থী করবে আমরা তাঁর হয়েই লড়াই করব।’’ অজিত বিঁধেছেন দিলীপকেও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দিলীপ ঘোষের কথা এখন হ-য-ব-র-ল বলে মানুষ মনে করেন। কে জিতবে সেটা মাঠেই দেখা যাবে।’’

এ দিকে, প্রধান দুই যুযুধানের থেকে অন্তত নাম ঘোষণার ক্ষেত্রে এক কদম এগিয়ে গিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট। ইতিমধ্যেই তারা প্রার্থীও ঠিক করে ফেলেছে। তাদের প্রার্থী শহরের প্রাক্তন কংগ্রেস উপপুরপ্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌমেন খান বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে জোট হচ্ছে বলে আপাতত ঠিক হয়েছে। জোট প্রার্থী হিসাবে আমরা চিত্ত মণ্ডলকে বেছেছি। জয়ের লক্ষ্যেই আমরা লড়াই করব। কংগ্রেসের পুরবোর্ড ও বিধায়ক হিসাবে চাচার উন্নয়নকে স্মরণ করে মানুষ ভোট দেবেন।” জোটের কথা মানছে সিপিএমও। দলের জেলা কমিটির সদস্য অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের জোট হচ্ছে বলেই শুনেছি। সে ক্ষেত্রে জোটপ্রার্থীই জিতবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন