বিধায়কদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা। বিধানসভায়। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভায় কাজের পদ্ধতি ও সহবতের পাঠ দিতে স্পিকারের ডাকা কর্মশালায় যোগ দিতে গিয়ে ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে পড়ল বিজেপি শিবির! এমন প্রশিক্ষণের কোনও মূল্য নেই বলে হাজিরা খাতায় সই কেটে দিয়ে বেরিয়ে আসছিলেন বিজেপির এক বিধায়ক। বিরোধী দলের সচেতক মনোজ টিগ্গার সঙ্গে আরও কয়েক জন দলীয় বিধায়ককে সেই কর্মশালায় ঢুকতে দেখে অবস্থান বদলে সেখানে আবার অংশগ্রহণ করলেন তিনি! বিরোধীরা শেষ পর্যন্ত কর্মশালায় আসায় খুশি বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সব মিলিয়ে মাত্র শ’খানেক বিধায়কের কর্মশালায় হাজিরাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি।
বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে কাল, বুধবার। সেই উপলক্ষে সর্বদল এবং কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে আজ, মঙ্গলবার। গত অধিবেশনের শেষেই স্পিকার বলেছিলেন, বিধায়কদের ভূমিকা ও আচরণ বহু ক্ষেত্রেই বিধানসভার জন্য মানানসই হচ্ছে না। তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য কর্মশালা করা হবে। বিধানসভায় সোমবার সেই কর্মশালায় বক্তা হিসেবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও নাম ছিল। তবে তিনি আসেননি। বিজেপি কী করবে, তা নিয়ে কৌতূহল ছিলই। চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ সেখানে এসে পৌঁছে দেখেন, তাঁর দলের আর কেউই নেই। সঙ্গীদের না দেখে খাতায় করে ফেলা সই কেটে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘এখানে এক রকম বলা হয় আর বিধানসভার ভেতরে বিরোধীদের গণতান্ত্রিক সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে, এ সব মূল্যহীন!’’ বেরোনোর মুখেই দেখা মনোজ-সহ আরও কয়েক জন বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে। তাঁরা যাচ্ছেন দেখে বঙ্কিমবাবুও তাঁদের সঙ্গে ফের ক্লাসে ঢুকে যান! পরে মনোজ বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকলেরই থাকা উচিত।’’
প্রশিক্ষণ শিবিরে বক্তা ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক তাপস রায়েরা। কী ভাবে প্রশ্ন-উত্তর করতে হয় থেকে শুরু করে স্বাধিকার কমিটির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেন সৌগতবাবু। কমিটি এবং অন্যান্য ব্যবস্থা কাজে লাগানোর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন মানসবাবু। সাম্প্রতিক কালের কিছু ঘটনা উল্লেখ করে স্পিকার বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিচার ব্যবস্থা যে ভাবে বিধানসভার কার্যকলাপের মধ্যে ঢুকে পড়ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।