রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুরে অবরোধ

হুমকিতে নজর কাড়ছে বিজেপিও

পাহাড়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে শুক্রবার সিউড়িতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল থেকে তৃণমূলকে হঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। হুঁশিয়ারি শুনে বসে নেই তৃণমূলও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি ও রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫০
Share:

বিক্ষোভ: বক্তব্য রাখছেন রামকৃষ্ণ রায়। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

পাহাড়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে শুক্রবার সিউড়িতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল থেকে তৃণমূলকে হঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। হুঁশিয়ারি শুনে বসে নেই তৃণমূলও। দুপুরেই সিউড়ি থানায় বিজেপির বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য, সুস্থিরতা নষ্ট করা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের সিউড়ি শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার।

Advertisement

এ দিন সিউড়িতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রামকৃষ্ণবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘এ ভাবে দিনের পর দিন হামলা যদি হয়, আর প্রশাসন যদি নিষ্ক্রিয় থাকে তা হলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা আত্মরক্ষায় অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হবেন। প্রশাসন ঠিক ভূমিকা না নিলে বীরভূমেও আগুন জ্বলবে। তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন ও তৃণমূল সরকার।’’ এখানেই না থেমে ওই বিজেপি নেতার সংযোজন, ‘‘আমাদের দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই। শান্তি চাই, তাই চুপ করে আছি। তবে এমন আক্রমণ চলতে থাকলে হামান দিস্তায় যেমন আদা পেষাই করা হয়, সে ভাবেই তৃণমূল কর্মীদের পিষে ফেলতে তৈরি বিজেপি।’’

বৃহস্পতিবার পাহাড়ে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে অভিযোগের তির ছিল শাসকদল ও বিনয় তামাঙ্গের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ওই ঘটনায় প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় বিজেপি। বীরভূমের রামপুরহাট, বোলপুরের সঙ্গে কর্মসূচি ছিল জেলা সদর সিউড়িতেও।

Advertisement

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয় সিউড়ি সার্কিট অফিসের কাছ থেকে। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়, কালোসোনা মণ্ডল-সহ অনেকে। সেখানে থেকে আরটি গার্লস, দলীয় কার্যলায়, সিউড়ি চৈতালি মোড় হয়ে জেলা প্রশাসনিক ভবনের পাশ দিয়ে মূল রাস্তা ধরে প্রতিবাদ মিছিল পৌঁছয় সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে। মিছিল থেকে রাজ্যে ক্ষমতাসীন শাসকদল, বিনয় তামাঙ্গ, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা সহ নানা স্লোগান ছিল। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা।

বিজেপি নেতার হঁশিয়ারির পরেই সিউড়ি থানায় রামকৃষ্ণ রায়, জেলার আর এক বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল সহ অন্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তৃণমূল শহর সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, আইন হাতে তুলে না নিয়ে জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই অভিযোগ করা হয়েছে।

কেন হঠাৎ এত উত্তেজিত হলেন রামকৃষ্ণবাবু? বিজেপি নেতাদের দাবি, দার্জিলিংয়ে দিলীপ ঘোষ আক্রান্ত হওয়ার পরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তাঁকে কটাক্ষ করেন সংবাদমাধ্যমে। এ ছাড়া জেলায় আক্রান্ত হচ্ছেন দলীয় কর্মীরা। প্রশাসনও নিরেপক্ষ থাকছে না। তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। আর রামকৃষ্ণবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমি তো বলিনি আক্রমণ করব। বলেছি, যদি আক্রান্ত হই তা হলেই ওই পথ নেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের এফআইআর প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতির বক্তব্য, ‘‘রামনবমীর পর থেকে আমাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৪০টি মামলা হয়েছে। যার অধিকাংশই মিথ্যে। সংখ্যাটা না হয় বাড়ল। তাতে ক্ষতি নেই।’’

মিছিল হয় রামপুরহাটেও। রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম জাতীয় সড়কের উপরে রামপুরহাট লোটাস প্রেস মোড় অবরোধ করা হয়। মিনিট কুড়ির ওই কর্মসূচিতে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব থেকে মহকুমা স্তরের নেতৃত্ব এবং রামপুরহাট মণ্ডল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচি ঘিরে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখান থেকেও নানা হুমকি দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে ছিলেন বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরী,

জেলা সহ সভাপতি রূপা মণ্ডল, যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক ধ্রুব সাহা, বিজেপি-র জেলা সম্পাদক অনিল সিংহ, সহ সভাপতি সুধীররঞ্জন দাস গোস্বামী, রামপুরহাট মণ্ডল কমিটির সভাপতি শান্তনু মণ্ডল-সহ অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন