কাজ চালিয়ে যান, রূপাকে আশ্বাস কৈলাসের

রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-রাহুল সিংহ দ্বৈরথ মেটাতে আসরে নামতে হল রাজ্য বিজেপি-র নতুন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। বিবাদী বাগ এলাকার একটি বেসরকারি হোটেলে শুক্রবার কৈলাসের সঙ্গে দেখা করে রূপা রাহুলবাবুর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের বিষয়টি বিস্তারিত জানান। হাবরা-অশোকনগরে গত বৃহস্পতিবার ত্রাণ দিতে গিয়ে শাসক দলের হাতে হেনস্থার শিকার হওয়ার পরে রূপার পাশে দাঁড়াননি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

কৈলাস বিজয়বর্গীয়

রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-রাহুল সিংহ দ্বৈরথ মেটাতে আসরে নামতে হল রাজ্য বিজেপি-র নতুন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে।

Advertisement

বিবাদী বাগ এলাকার একটি বেসরকারি হোটেলে শুক্রবার কৈলাসের সঙ্গে দেখা করে রূপা রাহুলবাবুর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের বিষয়টি বিস্তারিত জানান। হাবরা-অশোকনগরে গত বৃহস্পতিবার ত্রাণ দিতে গিয়ে শাসক দলের হাতে হেনস্থার শিকার হওয়ার পরে রূপার পাশে দাঁড়াননি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। বরং, তিনি বলেছিলেন, ওই কর্মসূচি দলের ছিল না। দলের রাজ্য নেতৃত্বের এমন অবস্থানে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও আহত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রূপা। এ দিন কৈলাসকে ওই ঘটনা জানিয়ে প্রতিকার চান তিনি। দলীয় সূত্রের খবর, কৈলাস তাঁকে নিজের মতো কাজ চালিয়ে যেতে এবং সমস্যা হলে তাঁকেই জানাতে বলেছেন।

রূপা অবশ্য কৈলাসের সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘কৈলাসজির সঙ্গে কথা বলে ভাল লেগেছে। ব্যক্তিগত ক্ষোভ বড় ব্যাপার নয়। রাজনীতি করতে এসেছি। সেটা মান-সম্মান বাঁচিয়েই করতে হবে।’’ রূপা-রাহুল দ্বৈরথ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে কৈলাস বলেন, ‘‘কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। সেটা মিটে গিয়েছে। রূপা বিজেপি কর্মী। পার্টির লাইন অনুযায়ী যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই তাঁর ক্ষমতা কাজে লাগানো হবে। রূপা, রাহুল সিংহ, অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় মিলে সংগঠনের কাজ করবেন।’’ রাহুলবাবুর আচরণে রূপার মানহানি হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর পর কি রূপা সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারবেন? কৈলাসের জবাব, ‘‘সকলেই বিজেপি-র বিস্তারের জন্য কাজ করবেন। রাহুলদা, অমলজি সকলে মিলে যা কাজের দায়িত্ব দেবেন, রূপা সবই করবেন।’’

Advertisement

রাহুলবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কোনও ক্ষোভের কথা জানা নেই। কারও সম্মানে আঘাত লেগে থাকলে আমাকে সরাসরি বলুন।’’ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির বাজোরিয়াও এ দিন কৈলাসের সঙ্গে দেখা করেন। আজ, শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেপ্টেম্বরেই রাহুলবাবুর রাজ্য সভাপতিত্বের বর্তমান মেয়াদ ফুরোচ্ছে। কিন্তু রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহের দাবি ছিল, কোনও রাজ্যে সামনে বড় ভোট থাকলে সেখানে সাংগঠনিক নির্বাচন না করাই দলের রেওয়াজ। কৈলাস কিন্তু রাহুলবাবুকে অপসারণের সম্ভাবনা খারিজ করে দেননি। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দেখতে থাকুন, এর পর কী হয়!’’ বিজেপি সূত্রেরও খবর, সব কিছু পরিকল্পনা মতো চললে আগামী এক মাসের মধ্যেই দলের রাজ্য কমিটি ঢেলে সাজাবেন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তার আগে সাধারণ কর্মীদের মতামত নিতেই কলকাতায় ঘাঁটি গেড়েছেন কৈলাস। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে দলের কার্যপদ্ধতি বদলানো হবে। যে টিম এখন কাজ করছে, তার বিস্তার বা অদলবদল করা হবে। প্রতিটি জেলা ধরে নেতাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিধানসভায় ভাল ফল করতে হলে সাংগঠনিক প্রস্তুতি দরকার। তার জন্য প্রয়োজনীয় সবই করা হবে।’’

এ দিন কৈলাসের সঙ্গে দেখা করে রাহুলবাবুকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পদ থেকে অপসারণের আর্জি জানান প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সত্যব্রত (জলু) মুখোপাধ্যায়, আর কে হান্ডা, কে ডি বিশ্বাস, সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বিধুশেখর শাস্ত্রী, সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সূত্রের খবর, নতুন দল গড়ার হুমকিও দেন তাঁদের একাংশ। জলুবাবুকে ফের রাজ্য সভাপতি করতে চায় ওই শিবির।

দলের পরবর্তী নেতৃত্ব বাছতে সাধারণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কে, এ নিয়ে একটি গোপন সমীক্ষাও করিয়েছিল বিজেপি। তাতে সবচেয়ে পছন্দের বিজেপি নেত্রী হিসাবে উঠে এসেছেন রূপা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্যই তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে বলে সমীক্ষায় ইঙ্গিত। যদিও সঙ্ঘের পছন্দের তালিকায় রূপা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন