নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মালা দিচ্ছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। — নিজস্ব চিত্র
আবক্ষ মূর্তি প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের। আবরণ উন্মোচন করলেন বিজেপি নেতা! এবং তাঁর মুখে অসহযোগিতার অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে!
সোমবার বিকেলে বসিরহাট সাধারণ পাঠাগারে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি উদ্বোধনে এমনই চমকের সাক্ষী থাকলেন বহু মানুষ।
১৯৭৭ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাবেক বসিরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন নারায়ণবাবু। ২০১১ সালে সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকেও জেতেন। মোট আট বারের এই সিপিএম বিধায়ক টানা ৪৬ বছর বসিরহাট পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। তিন বার উপপুরপ্রধান এবং এক বার পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। বসিরহাট হাইস্কুলের এই প্রাক্তন শিক্ষক ২০১৪ সালে বিধায়ক থাকাকালীনই মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জেতেন বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য। নারায়ণবাবুর অনুগামীরা তখন থেকেই তাঁর মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শমীকবাবুর কাছে দরবার করছিলেন। তাঁরা চেয়েছিলেন, ইছামতীর পাশে পার্ক তৈরি করে নারায়ণবাবুর মূর্তি বসানো হোক। পার্কটির নামকরণও হোক প্রয়াত ওই নেতার নামে। শমীকবাবু উদ্যোগীও হন।
কিন্তু পার্কই তৈরি হয়নি। প্রায় দু’লক্ষ টাকায় নারায়ণবাবুর ব্রোঞ্জের আবক্ষ মূর্তিটি তৈরি হয়ে গিয়েছিল কয়েক মাস আগেই। এতদিন পড়ে ছিল ওই পাঠাগারে। পার্ক না হওয়ায় শেষমেশ পাঠাগার চত্বরেই মূর্তিটি বসানো হল। মূর্তির আবরণ উন্মোচনের পরে শমীকবাবু বলেন, ‘‘পার্ক তৈরি করে মূর্তিটি বসানোর জন্য আমার বিধায়ক তহবিলের ১০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছিলাম। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় মূর্তিটি পার্কে জায়গা পেল না।’’ এই অভিযোগ পুরপ্রধান তৃণণূলের তপন সরকার মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘পার্কের জন্য যে ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে, তার টেন্ডারের কাজ হয়ে গিয়েছে। তবে, মূর্তি বসানো নিয়ে কেউ আমাকে কিছু জানাননি।’’
নারায়ণবাবুর জন্য প্রাক্তন বিজেপি বিধায়কের এই উদ্যোগ এ দিন প্রশংসিত হয়। শমীকবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সঙ্কীর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। নারায়ণদা সিপিএমের না হয়ে যদি তৃণমূলের হতেন, তা হলেও একই ভাবে সাহায্য করতাম।’’ তৃণমূল নেতারা এ নিয়ে কথা বলতে চাননি।