West Bengal Budget 2024-25

কী আছে, কী নেই, কারা কী পেলেন না? খুঁটিনাটি তুলে ধরে রাজ্যের বাজেটের সমালোচনা শুভেন্দুর

বিধানসভার অধিবেশনের পর রাজ্য বাজেটের সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাজেটের প্রতিটি ঘোষণা ধরে ধরে তিনি ব্যাখ্যা করেন এবং জানান, কারা এই বাজেটে বঞ্চিত হলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৯
Share:

বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: ফেসবুক।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় আগামী অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করা হয়েছে। অধিবেশনের পর সেই বাজেটের সমালোচনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাজেটে কী আছে আর কী নেই, কারা বঞ্চিত হলেন, খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়েছেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, এই বাজেট ‘দিশাহীন’। কেন ‘দিশাহীন’, তা-ও জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই বাজেট ভোটের প্রচার ছাড়া আর কিছু নয়। এতে বেকারদের কর্মসংস্থান, বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগ, শিল্প বাণিজ্যের পরিবেশ নিয়ে রাজ্যের অগ্রগতির কোনও দিশা নেই।’’ তাঁর মতে, ‘‘রাজ্য সরকার বাজেটের মাধ্যমে কিছু কিছু জায়গায় অর্থ বিলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অসমে মহিলারা আড়াই হাজার টাকা করে পান। মধ্যপ্রদেশেও অনেক বেশি টাকা মহিলাদের দেওয়া হয়। এখানে মহিলাদের ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১০০০ করা হচ্ছে মাত্র।’’ উল্লেখ্য, বাজেটে রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাসে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১০০০ টাকা করে পাবেন মহিলারা। সেই ঘোষণাকেই কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু।

‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এ তফসিলি জাতি উপজাতির মহিলাদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হত। বাজেটে তাঁদের ১২০০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘এটা ওঁদের অপমান। সাধারণ ক্যাটাগরির মহিলাদের তুলনায় ওঁদের দ্বিগুণ টাকা পাওয়ার কথা। ২০০ টাকা বাড়িয়ে ওঁদের অপমান করা হয়েছে।’’

Advertisement

সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাতা বৃদ্ধির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। সে প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মাত্র ন’হাজার টাকার বিনিময়ে সিভিকদের দিয়ে পুলিশের সমান কাজ করানো হয়। আজ এক হাজার টাকা বাড়িয়ে ভোট কিনতে চাইছে। ২০১২ সাল থেকে এক টাকাও বৃদ্ধি করা হয়নি। বিজেপি সমকাজে সমবেতন ভাবধারায় বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বেতন পেতে পারেন।’’

বাজেটে কী কী নেই, তা বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘শূন্যপদে নিয়োগের কোনও সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নেই এই বাজেটে। এখানে পাহাড়, জঙ্গলমহল, সুন্দরবন উপেক্ষিত। কৃষকদের জন্যেও তেমন কোনও ঘোষণা করা হয়নি বাজেটে। আশাকর্মী, পঞ্চায়েতে কর আদায়কারী, যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আংশিক সময়ের জন্য কাজ করেন, তাঁদের জন্য বাজেটে কোনও বৃদ্ধির ঘোষণা নেই। শিল্পের কোনও দিশাও বাজেটে দেখাতে পারেনি সরকার।’’

চা শ্রমিকেরা এই বাজেটে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, ‘‘এই বাজেটে অসত্য ভাষণ রয়েছে। ভোটের আগে মিথ্যাচার করা হয়েছে। একমাত্র মহার্ঘভাতা বৃদ্ধিকে সামনে রেখে ভোট কিনতে চাইছে সরকার। রাজ্য যা ঘোষণা করছে, তার পরেও কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র ফারাক থাকবে অন্তত ৪০ শতাংশ। তা-ও বর্ধিত ডিএ উনি (পড়ুন মমতা) দেবেন ভোটের পরে।’’

শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘পেট্রল, ডিজেলে কোনও ছাড়ের উল্লেখ নেই বাজেটে। এলপিজি সিলিন্ডারে রাজ্য ৩০০ টাকা করে কর নেয়। রাজস্থান ৪০০ টাকা ছাড় দিয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম, রাজস্থানের মতো না হলেও কিছুটা ছাড় সিলিন্ডারে দেবে রাজ্য সরকার। কিছুই দেওয়া হয়নি।’’

সংখ্যালঘুদের জন্যও বাজেটে বরাদ্দ নেই বলে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, ‘‘যে সংখ্যালঘুরা ভোট দিয়ে ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছেন, বাজেটে তাঁদের উন্নয়নের জন্য কোনও ঘোষণা নেই। তাঁদের বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে। এমনকি, আদিবাসী, লেপচা, ভুটিয়ারাও এই বাজেটে উপেক্ষিত। হাসপাতাল, শিক্ষার খাতেও বাজেটে কোনও বরাদ্দ করা হয়নি।’’ বাজেটে আয়, ব্যয়ের সামঞ্জস্য নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। বিধানসভায় এই বাজেটের অন্তঃসারশূন্যতা তুলে ধরার চেষ্টা করবেন বলেও জানান শুভেন্দু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন