BJP

আন্দোলনে নেই দল, নালিশ বিজেপি বিধায়কদের

সাংগঠনিক বিষয়ে তাঁদের মতামত নেওয়া হয় না, স্থানীয় কর্মসূচিতে বিধায়কেরা ডাক পান না—এই রকম নানা অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরে সরব বিজেপির পরিষদীয় দলের একাংশ। তাঁরা এই বিষয়ে আলাদা করে বনসলের সঙ্গে বৈঠকও করতে চেয়েছিলেন।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ০৮:৩৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষোভ জমেছিল। এক ধাক্কায় প্রায় সবটা উগরে দিলেন বিজেপির বিধায়কেরা। সংগঠনের সঙ্গে পরিষদীয় দলের দূরত্বের কথা বহু বার উঠে এসেছিল রাজ্য বিজেপির আলোচনায়। এ বার তাই নিয়েই ক্ষোভের কথা পৌঁছল পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলের কাছে। সূত্রের খবর, ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী হয়েছেন বনসলও।

সাংগঠনিক বিষয়ে তাঁদের মতামত নেওয়া হয় না, স্থানীয় কর্মসূচিতে বিধায়কেরা ডাক পান না—এই রকম নানা অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরে সরব বিজেপির পরিষদীয় দলের একাংশ। তাঁরা এই বিষয়ে আলাদা করে বনসলের সঙ্গে বৈঠকও করতে চেয়েছিলেন। সেই মতোই রাজ্য বিজেপির বিধাননগর কার্যালয়ে বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বনসল। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেখানে উপস্থিত অন্তত ২৫ জন বিধায়কের অধিকাংশই সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিধায়কদের ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হয় না। তাঁরা কিছু পরামর্শ দিলে শোনা হয় না। এমনকি, তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের ‘কৃতিত্ব’কে খাটো করে দেখাতে বলা হয়, দল টিকিট দেয় বলেই আজ তাঁরা নেতা। তাঁরা যেন ভুলে না যান, দলের সংগঠনের জোরেই তাঁরা জিতেছেন।

সেই সঙ্গে বনসলের কাছে তাঁদের অভিযোগ, দল অনেক বেশি ‘রুটিন’ কর্মসূচি নির্ভর হয়ে পড়েছে। অম্বেডকর জয়ন্তী, বিজয় দিবস, অহল্যাবাই হোলকারের জন্মদিনের মতো কর্মসূচির অবশ্যই গুরুত্ব আছে। কিন্তু সেই গুলোকে সামনে রেখে মাসব্যাপী কর্মসূচি করা, আলোচনা সভা চালানো অর্থহীন। তার চেয়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, জ্বলন্ত বিষয়গুলি নিয়ে গণ-আন্দোলন সংগঠিত করতে পারলে অনেক বেশি রাজনৈতিক লাভ ঘরে তোলা যেত। বিধায়কদের অনেকের বক্তব্য, বিদ্যুতের চড়া মাশুল, গ্রীষ্মকালে বহু এলাকা জলহীন হয়ে থাকা, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শংসাপত্র তৈরি করে অনুপ্রবেশকারী, রোহিঙ্গাদের বসবাসের মধ্যে দিয়ে জনবিন্যাসের পরিবর্তন—এই বিষয়গুলি নিয়ে আন্দোলন করা হচ্ছে না। সূত্রের খবর, বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পরে বনসল রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন। বনসলের নির্দেশ, এ বার থেকে এলাকার কর্মসূচিতে অবশ্যই বিধায়কদের রাখতে হবে। পরিকল্পনায় তাঁদের শামিল করতে হবে। বিধায়কেরা ওই এলাকায় দলের মুখ। তাঁদের বাদ দিয়ে কিছুতেই কর্মসূচি করা যায় না।

তবে বিধায়কদের ক্ষোভ যে প্রশমিত হয়েছে, বিষয়টা এখনও তেমনটা নয় বলেই বিজেপি সূত্রের খবর। এক বিধায়কের কথায়, “উনি (বনসল) সবটাই লিখে নিয়েছেন। কিন্তু কিছুই বলেননি। উনি কী চাইছেন, আমরা জানি না।” অন্য এক বিধায়কের বক্তব্য, “সরকারের সঙ্গে লড়াইটা অনেকটাই বিধানসভায়। বিধায়কেরাই লড়াইটা করছেন। সংগঠনের লোকেরা কোথায়? তাঁদের ভূমিকা কী?’’ তবে এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, “কোন বিধায়ক কী বলেছেন, আমি জানি না। যাতে তাঁরা মুক্ত মনে কথা বলতে পারেন, তাই আমরা আলাদা করে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। যা ভাবার, বনসলই ভাববেন।” বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে ওঠে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গও। পশ্চিমাঞ্চলের এক বিধায়ক প্রশ্ন করেন, কী কারণে দিলীপকে ‘ব্রাত্য’ করে রাখা হচ্ছে? ওঁর অপরাধ কি জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়া? ওটা হিন্দুদেরই মন্দির। ভুল করলে ডেকে দলের মধ্যে কথা বলা যেত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন