Saumitra Khan

Saumitra Khan: পাঁচ ঘণ্টায় ভোল বদল, ইস্তফা নয় জানালেন সৌমিত্র, বিজেপি তবু অস্বস্তিতে

রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার দাবি, যে হেতু বাঁকুড়ার তুলনায় বিষ্ণুপুরে ফল ভাল হয়েছে তাই সৌমিত্র আশা করেছিলেন মন্ত্রিত্ব পাবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ২১:৫৮
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নেটমাধ্যমে যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন বুধবার বিকেলে। তার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই ভোল বদল বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র। জানালেন, ওই পদ তিনি ছাড়ছেন না। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, নেটমাধ্যমে এই পোস্ট দেখেই তাঁকে ফোন করেছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) বিএল সন্তোষ। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও তাঁকে ফোন করেন বলে দাবি বিষ্ণুপুরের এই সাংসদের। তার পরই তিনি পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি সৌমিত্রর।

Advertisement

যদিও নেটমাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা করলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে দলকে কোনও চিঠি পাঠাননি সৌমিত্র। এ প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ফেসবুকে ঘোষণা করলেই হয় না। পদত্যাগ করার কিছু নিয়ম আছে।” বুধবার নেটমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেন সৌমিত্র। সেখানে সরাসরি শুভেন্দু অধিকারী এবং দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। যুব মোর্চার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ওই ভিডিয়ো বার্তায় জানান সৌমিত্র। এর পরই তিনি বলেন, “বিধানসভায় যিনি দলনেতা হয়েছেন, তিনি শুধু নিজেকে জাহির করছেন, দলকে নয়। যে ভাবে দলের কাজকর্ম চলছে, তাতে যুবমোর্চার সভাপতি হিসেবে কাজ চালানো মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমার ছেলেরা একসঙ্গে লড়াই করেছি। কিন্তু এখন যিনি নেতা, তিনি ফোকাসটা অন্য জায়গায় নিয়ে চলে গিয়েছেন। বার বার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বোঝাচ্ছেন। দেখাচ্ছেন, তিনিই বিজেপি-র সবচেয়ে বড় নেতা।’’

বাঁকুড়া জেলায় দু’টি লোকসভা আছে। একটা বাঁকুড়ায়, আর একটা বিষ্ণুপুর। বাঁকুড়ায় দলের সাংসদ সুভাষ সরকার। আর বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার তুলনায় বিষ্ণুপুরে ফল ভাল হয়েছিল। বাঁকুড়ায় বিজেপি পেয়েছে ৪টি আসন, সেখানে বিষ্ণুপুরে ৫টি আসন পেয়েছে দল। রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার দাবি, যে হেতু বাঁকুড়ার তুলনায় বিষ্ণুপুরে ফল ভাল হয়েছে তাই সৌমিত্র আশা করেছিলেন মন্ত্রিত্ব পাবেন। ঘটনাচক্রে, প্রায় ১৫ দিন ধরে দিল্লিতেই ছিলেন সৌমিত্র। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ফিরে এসেছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় সৌমিত্র অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে তাঁর ‘গোঁসা’ ভাঙাতে সন্তোষ বা শাহ ফোন করেছিলেন কি না তা নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র নেতারা কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন।

Advertisement

এই প্রথম নয়, এর আগেও নানা ভাবে দলকে অস্বস্তিত্বে ফেলেছেন সৌমিত্র। আগেও পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করে ফের তা তুলে নিয়েছিলেন। মুকুল রায় যখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সে সময়ও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, গুরুর মৃত্যু হয়েছে। তাই তিনি ন্যাড়া হবেন। ভোটের মুখে বলেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। এ রকম বার বার নানাবিধ মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়াচ্ছিলেন তিনি। ফলে দলের অস্বস্তিও বাড়ছিল। আবারও তিনি যুব মোর্চার পদ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা এবং শুভেন্দু, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নেটমাধ্যমে মুখ খুললেন। ফলে বিজেপি-র সেই অস্বস্তি রয়েই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন