গোষ্ঠীবাজি নয়, দিল্লির হুঁশিয়ারি দিলীপদের

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য বিজেপির রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে ভর্ৎসনা করলেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ। শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের শেষ দিন উপস্থিত সদস্যদের শিবপ্রকাশ কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেন।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৮:৪১
Share:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য বিজেপির রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বকে ভর্ৎসনা করলেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ।

Advertisement

শিলিগুড়িতে দলের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকের শেষ দিন উপস্থিত সদস্যদের শিবপ্রকাশ কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেন। ওই কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য, ভোট পর্বে দীর্ঘ সময় এ রাজ্যে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাটিয়ে তিনি বুঝেছেন, বাইরের শত্রুর মোকাবিলা করার চেয়ে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করতেই তাঁরা বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু এটা সুস্থ চিন্তা নয়। আগের রাজ্য সভাপতি এবং বর্তমান রাজ্য সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে শিবির ভাগাভাগি হয়ে রয়েছে। আগের রাজ্য সভাপতি দলের কোনও ক্ষতি করেননি। সুতরাং, এটা কাম্য নয়। জেলা সভাপতি বদলের ক্ষেত্রেও প্রাক্তন ও বর্তমানের দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিবপ্রকাশ।

রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহ এবং বর্তমান সভাপতি দিলীপ ঘোষের শিবিরের মধ্যে অম্লমধুর সম্পর্ক সুবিদিত। বিধানসভা ভোটে রাহুলবাবু বা দিলীপবাবু কেউই নিজের কেন্দ্র যথাক্রমে জোড়াসাঁকো এবং খড়্গপুর সদর ছেড়ে অন্যের প্রচারে যাননি। এক সময় যাঁরা রাহুলবাবুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছিলেন, দিলীপ জমানায় তাঁদের দলে গুরুত্ব বেড়েছে। এই সংস্কৃতি ঘোচানোর জন্যই শিবপ্রকাশ এ দিন বার্তা দিয়েছেন বলে বিজেপিরই একাংশের ব্যাখ্যা।

Advertisement

এর পাশাপাশি রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকে অর্থের অপচয় বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছেন শিবপ্রকাশ।

বৈঠকে কারও নাম না করে শিবপ্রকাশ আরও বলেন, এ বার ভোটে অনেকেই ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য লড়েছেন। এ ভাবে দলকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করা যায় না। আর এ ভাবে চললে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও দারুণ ফল করা সম্ভব নয়। বিজেপি-র একাংশের মতে, ভোটে দাঁড়িয়ে যাঁরা সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ার দিকে বেশি মন দিয়েছিলেন অথবা দলের কাছ থেকে টাকা নিয়েও ভাল করে প্রচার করেননি, তাঁদের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন শিবপ্রকাশ।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও এ দিনের বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার বার্তা দেন।

বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের বিশ্লেষণ, এ বার বিধানসভা ভোটে দলের আশানুরূপ ফল হয়নি। আশার দরজা খুলেছে মাত্র। দলের পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেটাকে ধরে রেখে আগামী দিনে এমন ভাবে ভোট বাড়াতে হবে, যাতে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীকে এ রাজ্য থেকে অন্তত ২০টি আসন দেওয়া যায়।

অধুনা কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুলবাবু বলেছেন, ‘‘এ বার ভোটে যে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেটা বহু দিনের চেষ্টার ফসল। নিজেদের ভুলে একে হাতছাড়া হতে দেওয়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন