পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মরা গাঙে ‘ঢেউ’ তুলতে শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীতেই শরণ নিল দল। পরের মাস থেকে গোটা রাজ্য জুড়ে প্রধানমন্ত্রীর দশটি জনসভা করানোর সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি।
আজ অমিত শাহের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়-র বৈঠক হয়। রাজ্য নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন কৈলাস ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। পরে দলীয় সূত্র জানায়, পরীক্ষাপর্ব শেষ হলেই রাজ্যজুড়ে নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে দশটি সভা করানো হবে। রাজ্যকে ইতিমধ্যেই সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সব ক’টি এলাকায় যাতে মোদী পৌঁছে যেতে পারেন, সেই হিসেব কষেই এই জনসভার আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি, দিল্লি থেকে এমন নেতাদের নিয়ে যাওয়া হবে, যাঁদের বাংলায় গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এর মধ্যে বাংলা বলার দৌলতে এগিয়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সুষমা স্বরাজকে দিয়েও প্রচার করানো হবে।
বিজেপি সূত্রের মতে, গত বছর তা-ও বিজেপির পক্ষে একটি হাওয়া উঠেছিল। কিন্তু সেই হাওয়া এখন স্তিমিত। তার উপর কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে জোটের যে হাওয়া উঠছে, সেটি যদি কোনও ভাবেও বাস্তবায়িত হয়, তা হলে বিজেপির সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ। শুধু তাই নয়, যে ভাবে আরএসএস এখন রাজ্য সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে, তাতেও দলের নেতাদের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। আজ অবশ্য কলকাতায় আরএসএস নেতা ভাইয়াজি জোশী সঙ্ঘ ও দলের মধ্যে সমন্বয় বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতেও যে ভোটের আগে সংগঠনের হাল ফিরবে, এমন কোনও আশার আলো দেখছে না বিজেপি শিবির। চলতি বছরে যে পাঁচ রাজ্যে ভোট রয়েছে, তার মধ্যে একমাত্র অসম ছাড়া আর কোথাও রাজ্য দখলের স্বপ্ন দেখছেন না বিজেপি নেতৃত্ব।
এই দুর্দিনে অমিত শাহ যাতে ‘চোখে পড়ার’ মতো সাফল্য দেখাতে পারেন, তার জন্য নরেন্দ্র মোদী নামক দলের ‘তুরুপের তাস’টিই ব্যবহার করতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সে কারণেই রাজ্যের সব প্রান্তে তাঁর জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে এগোনো হবে না, যে পরীক্ষা অসমে করা হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর পিঠে সওয়ার হয়েই এখন অমিত শাহ বাংলায় নিজের অগ্নিপরীক্ষায় নামতে চাইছেন।