ফাইল চিত্র।
দলের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিতে এত দিন বুথে বুথে মানুষের কাছে যাচ্ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এ বার নেট-দুনিয়াতেও কোমর বেঁধে নামছে বিজেপি। পুরোদস্তুর পেশাদার কর্মীদের দিয়ে দলের আইটি সেল ঢেলে সাজতে চলেছে তারা।
দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সেলের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কনটেন্ট রাইটিং-এডিটিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষ ও পেশাদার এক ঝাঁক ছেলেমেয়েকে নিয়োগ করা হবে। তাঁদের কাজ হবে— সারা দিন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিষয়ে বিজেপির বক্তব্য, কোনও ঘটনার প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি দলের ওয়েবসাইট, ফেসবুক, টুইটার-সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া। এই পথে বিজেপির ভাবাদর্শেও অনেক বেশি মানুষকে প্রভাবিত করতে সুবিধা হবে বলে গেরুয়া শিবির মনে করছে।
বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির রাজ্য দফতর লাগোয়া একটি বাড়ি নিয়ে কাজ করেছিল আইটি সেল। কিন্তু কৈলাসেরা মনে করছেন, এর কাজকর্ম এখনও বাঞ্ছিত উৎকর্ষে পৌঁছয়নি। ওই সেলকে আরও গতিময় ও তৎপর হতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির বক্তব্য আরও ঝকঝকে, বুদ্ধিদীপ্ত এবং নির্মেদ ভাবে তুলে ধরতে হবে, যাতে তরুণ প্রজন্ম আকৃষ্ট হয়। এ জন্য চাই পেশাদার কর্মী। এই সেলের আহ্বায়ক পদে এত দিন ছিলেন অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পূর্ণ সময় দিতে পারছেন না বলে তাঁর জায়গায় এক জন পূর্ণ সময়ের দলীয় কর্মীকেও বসাতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ।
বস্তুত, রাজ্য বিজেপি আইটি সেলকে দিয়ে এখন যেটা করাতে চাইছে, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য সেই কাজটাই করেছিল দলের সর্বভারতীয় আইটি সেল। সেই সময় গোটা দেশের, এমনকী, ইওরোপ-আমেরিকায় কর্মরত বহু পেশাদার আইটি কর্মী মোদীর জন্য ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। অনেকে পুরোপুরি, আবার কেউ কেউ সাময়িক ভাবে চাকরিও ছেড়েছিলেন ওই কাজ করবেন বলে। তাঁদের সকলে অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে আইটি সেলের সদস্য হননি। কিন্তু মোদী ব্রিগেডের সদস্য হয়েছিলেন। ২০১৯-এর লোকসভা ভোট এবং তার পরের বিধানসভা ভোট মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপি একই ভাবে ‘নেটিজেন’দের মাথায় পদ্ম প্রতীকটি একেবারে গেঁথে দিতে চাইছে। তারই জন্য এ রাজ্যের আইটি সেলে এখন সাজো সাজো রব। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও বিরোধী সিপিএমও এখন ‘নেটিজেন’দের নিশানা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয়। তৃণমূল এই কাজের জন্য ম্যানেজমেন্ট পাশ করা তরুণ-তরুণীও নিয়োগ করেছে।