বুঝে কথা বলুন, পরামর্শ দিলীপের

বহিরাগত তারকারা অনেকেই দলের জন্য উপযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছেন। বাংলায় বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়াতেও এঁদের কারও কারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৮
Share:

বহিরাগত তারকারা অনেকেই দলের জন্য উপযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছেন। বাংলায় বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়াতেও এঁদের কারও কারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এ-ও ঠিক, দলের রাজনৈতিক অবস্থানের বাইরে গিয়ে নিজেদের পছন্দমতো মুখ খুলে ইদানীং তাঁরাই আবার দলের বিড়ম্বনার কারণও হয়ে উঠছেন মাঝে-মধ্যে। এই অস্বস্তি এড়াতেই বাবুল সুপ্রিয়-রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো তারকা নেতা-নেত্রীদের এ বার সংযত হওয়ার বার্তা দিতে শুরু করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

Advertisement

সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাবুলের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় বসেছিলেন দিলীপবাবু। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীকে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, কোনও বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলার আগে তিনি যেন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দলের অবস্থান কী তা বুঝে নিয়ে তবেই যেন মুখ খোলেন। নচেৎ নয়। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতার সময়ে বাবুলের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের মতের অমিল স্পষ্ট ধরা পড়েছিল। রাজ্য সরকারের ওই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। দিলীপ ঘোষদের বক্তব্য ছিল, রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করে সরকার আসলে দেশভাগের ইতিহাস এবং স্মৃতি মানুষকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। আসলে দেশভাগের স্মৃতি উস্কে মেরুকরণের রাজনীতিতে হাওয়া দেওয়ার লক্ষ্য ছিল সঙ্ঘ পরিবারের। কিন্তু বাবুল টুইটে জানান, তিনি রাজ্যের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখার পক্ষে। তাতে অস্বস্তিতে পড়েন দিলীপবাবুরা। সেই কারণেই তাঁকে সতর্ক করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি। বাবুলের অবশ্য দাবি, ‘‘দিলীপদার সঙ্গে আমার এ রকম কোনও কথাবার্তা হয়েছে বলে আমার জানা নেই!’’

একই ভাবে সম্প্রতি দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের জাতীয় পরিষদের সম্মেলনে যোগ দিতে সম্প্রতি সে দেশে গিয়েছিলেন রূপা। দেশে ফিরে বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি যে আঁখো দেখা অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, তা আদতে বিজেপি-র অবস্থানের একেবারেই উল্টো। দিলীপ ঘোষকে পাশে নিয়েই ওই সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন রূপা। তাই এ ব্যাপারে দিলীপবাবুর কাছেও কৈফিয়ত চেয়েছেন সঙ্ঘ পরিবার নেতৃত্ব।

Advertisement

তবে বিজেপি-র এক নেতা বলেন, বাবুল বা রূপার যে খুব ত্রুটি রয়েছে তা নয়। দলের যে নেতারা বহুদিন ধরে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, সঙ্ঘের দর্শন তাঁদের মজ্জায় মিশে গিয়েছে। দলীয় অবস্থান নিয়ে তাঁদের সমস্যা হয় না। কিন্তু নতুন আসা তারকাদের অনেকে মতাদর্শ সম্পর্কে সচেতন নন। এঁদের কারও বা চিন্তাভাবনা তথাকথিত ‘উদার’, কিংবা ভাবমূর্তি সচেতন হয়ে উদারতা দেখানোর চেষ্টা করেন। জলে নেমেও গা ভেজাতে চান না। তাতেই সমস্যা হয়। তাই দলের সঙ্গে কথা বলে তবেই মুখ খোলার পরামর্শ দিয়েছেন দিলীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন