—ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে বিজেপি ১২৫-এর বেশি আসন পাবে না। বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিমত জানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, শনিবারের ব্রিগেড থেকেই বিজেপির মৃত্যুঘণ্টা বাজবে।
বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের সব থেকে বড় মঞ্চ হিসেবে শনিবারের ব্রিগেড সমাবেশকে তুলে ধরতে প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্বে। বিরোধী নেতাদের এই মঞ্চে মায়াবতীর বিশ্বস্ত নেতা বিএসপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সতীশ মিশ্রও আসছেন। মায়াবতী নিজে না এলেও সতীশের আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক শিবিরের মত। ব্রিগেডের ৪৮ ঘণ্টা আগে সভাস্থলের নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা, মঞ্চ তৈরি নিজে ঘুরে দেখেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানেই সাংবাদিকদের মমতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস ক’টি আসন পাবে বলতে পারব না। তবে বিজেপি ১২৫-এর বেশি আসন পাবে না বলেই মনে হয়। সেটা পেলেই বলব অনেক!’’
৫৪৩ আসনের লোকসভা ভোটে বাকি আসন সম্পর্কে মমতার বিশ্বাস, ‘‘আঞ্চলিক দলগুলিই হবে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নির্ণায়ক শক্তি।’’ তাঁর ডাকে ব্রিগেডের মঞ্চে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় রয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘যে নেতারা আসছেন, তাঁরা কে কী বলেন, তা শুনতে চাই। আমি কারও উপর আমার মতামত চাপিয়ে দেব না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেককে নিজের মতামত জানাতে দেওয়াই সৌজন্য।’’
অখিলেশ যাদব, তেজস্বী যাদব, চন্দ্রবাবু নায়ডু, দেবগৌড়া ও কুমারস্বামী, শরদ পওয়ার, স্ট্যালিন, ফারুক আবদুল্লা এবং ওমর আবদুল্লা, অরবিন্দ কেজরিবাল-সহ ঝাড়খণ্ড এমনকী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি থেকেও বিরোধী নেতারা ব্রিগেডে আসবেন বলে মমতা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করবেন লোকসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। থাকবেন তৃণমূলের সমর্থনে রাজ্য়সভায় জেতা কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও।
তবে কর্নাটকে উদ্ভূত সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দেবগৌড়া এবং কুমারস্বামী কলকাতায় আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এ দিন কুমারস্বামীকে ফোনে মমতা পরামর্শ দেন, ব্রিগেডে এসে বিজেপির ‘সরকার ভাঙার চক্রান্ত’ ফাঁস করুন। সূত্রের খবর, এ দিন কুমারস্বামীর সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর টেলিফোনে কথা হয়েছে। মমতা তাঁকে বলেছেন, কর্নাটকে সঙ্কট কেটে যাবে। তবে যে ভাবে বিজেপি আদাজল খেয়ে সরকার ফেলতে নেমেছে, মানুষের সামনে তা তুলে ধরা দরকার। তাই ব্রিগেডে এসে সব বলুন। জেডিএস সূত্রের খবর, আপাতত যে কর্মসূচি ঠিক হয়েছে, তাতে কুমারস্বামী ও দেবগৌড়া দু’জনই ১৯ তারিখ ব্রিগেডে হাজির থাকবেন।
ব্রিগেডের সভার পরে অতিথি-নেতাদের আলিপুরের সৌজন্য ভবনে চা-চক্রে আপ্যায়ন করবেন মমতা। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেখানে নেতারা একসঙ্গে বসে কিছুটা আলোচনারও সুযোগ পাবেন। সে ক্ষেত্রে ব্রিগেডের পরে আরও কী ভাবে এগনো যায়, তারও কিছু রূপরেখা পাওয়া যেতে পারে। অন্য়ান্য রাজ্যেও বিরোধী নেতাদের নিয়ে জন-সমাবেশ করার বিষয় ভাবনাচিন্তায় আছে। কথা হতে পারে তা নিয়েও।
এ বার ব্রিগেডে যাতে বেশি লোক ধরানো যায়, তাই মঞ্চ কিছুটা পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে। মূল মঞ্চে মমতার সঙ্গে বসবেন জাতীয় নেতারা। মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের জন্য আলাদা আলাদা তিনটি মঞ্চ। জেলা পরিষদের সভাধিপতি, মেয়র এবং পুর-প্রধানেরা বসবেন অন্য একটি মঞ্চে। থাকবে একাধিক জায়ান্ট স্ক্রিন। আজ, শুক্রবার থেকেই বিভিন্ন নেতা শহরে আসতে শুরু করবেন বলে মমতা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রিগেডের এই সমাবেশ ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে। এই সভাই হবে সংযুক্ত ভারতের সভা।’’