বোর্ডের অফিসে ঢুকছেন হরিদয়ালবাবু। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
টানা পাঁচ ঘণ্টার শুনানি। তার মধ্যে কখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হল অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়কে। কখনও প্রশ্ন করা হল এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের। সব শেষে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, তাঁরা শুনানিতে সন্তুষ্ট। সিদ্ধান্ত জানাবেন আগামী সপ্তাহের গোড়ায়।
হরিদয়ালকে অবশ্য আগেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দিয়েছে পর্ষদ। এরই মধ্যে আবার এ দিন প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়। স্কুল ইনস্পেক্টরকে (এসআই) ফোনে তিনিই প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। রেকর্ড করে রাখা সেই ফোন-কল এ দিন শুনানির সময়ে পর্ষদকর্তাদের শুনিয়েছেন এসআই।
পর্ষদ সূত্রের খবর, হরিদয়াল এ দিন বারবারই জানান, তিনি নির্দোষ। কিন্তু শুনানিতে হাজির প্রায় সকলেই তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় সুভাষনগর হাইস্কুলের সেন্টার সেক্রেটারি ছিলেন যিনি, তিনিও একই অভিযোগ করেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন এসআই বিশ্বনাথ ভৌমিক। শুধু স্কুলের পরিচালন সমিতির দুই সদস্য কিছুটা হরিদয়ালের পাশে দাঁড়ান বলে দাবি পর্ষদ সূত্রের।
বিশ্বজিৎ এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনেও মুখ খোলেন। সেখানে জানান, ইতিহাস পরীক্ষার দিন তাঁর প্রথম সন্দেহ হয়। ভৌতবিজ্ঞানের দিনে বিষয়টি চোখে পড়ে। এসআই-ও অঙ্ক পরীক্ষার দিন একই ঘটনা দেখতে পান। উল্টো দিকে, বিশ্বনাথ ভৌমিক, বিশ্বজিৎ রায় এবং সুভাষনগর স্কুলের আরও শিক্ষককে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন হরিদয়ালের আইনজীবী।
এ দিন শুনানির পরে হরিদয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ময়নাগুড়িতে তাঁর স্ত্রী ফাল্গুনীদেবী দাবি করেন, ‘‘মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমার স্বামী নির্দোষ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি (হরিদয়াল) একটু কড়া ধাতের মানুষ৷ উনি চান, শিক্ষকরা প্রত্যেকে সময়মতো স্কুলে আসুন৷’’ ফাল্গুনীদেবী বলেন, ‘‘এই নিয়েই বিশ্বজিৎবাবুকে কোনও দিন বকুনি দিয়েছিলেন৷ সম্ভবত সেই রাগেই বিশ্বজিৎবাবু এমনটা করছেন!’’