সন্তান-সহ যুবকের দেহ রেললাইনে

মাস তিনেক আগে স্ত্রী চলে গিয়েছিলেন বাপেরবাড়ি। দুই ছেলে ছিল বাবার কাছে। সোমবার শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-কে ফেরাতে গিয়ে লাভ হয়নি। অভিযোগ, সেখানে সবার সামনে রাকেশ সিংহকে (২৪) মারধরও করেন স্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামালপুর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২২
Share:

এখানেই পাওয়া যায় দুই ছেলে এবং রাকেশের দেহ। নিজস্ব চিত্র

মাস তিনেক আগে স্ত্রী চলে গিয়েছিলেন বাপেরবাড়ি। দুই ছেলে ছিল বাবার কাছে। সোমবার শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-কে ফেরাতে গিয়ে লাভ হয়নি। অভিযোগ, সেখানে সবার সামনে রাকেশ সিংহকে (২৪) মারধরও করেন স্ত্রী। রাতেই দুই ছেলে অজয় (৫) ও বিজয় সিংহকে (৩) নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান রাকেশ। মঙ্গলবার ভোরে বাড়ির পাশের বর্ধমান-হাওড়া কর্ড লাইনে ছিন্নভিন্ন দেহ মেলে বাবা, দুই ছেলের দেহ।
রেল পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হচ্ছে তাদের। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের ময়নাপুরে রেলের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বাস করে রাকেশের পরিবার। বাড়ির ছোট ছেলে তিনি। রাকেশের মা মালতী সিংহ জানান, বছর নয়েক আগে ১৫ বছর বয়সে মেমারির ভীমগেট এলাকার ১১ বছরের লক্ষ্মীকে বিয়ে করেন রাকেশ। ছোট ছেলে হওয়ার পর থেকেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। মালতীদেবীর ক্ষোভ, ‘‘লক্ষ্মীকে বলতে শুনেছি, ‘কালো বর আমার পছন্দ নয়’। তিন মাস আগে ও ছেলেদের ফেলে বাপেরবাড়ি যায়।’’
তারপর থেকে দাদু, ঠাকুমার কাছেই থাকত দু’ভাই। মৃতের দাদা গণেশ সিংহের দাবি, ‘‘সোমবার ভাই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে লক্ষ্মীকে ফেরত আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু লক্ষ্মী দুই ছেলের সামনেই ভাইকে মারধর করে। সেই রাগে-দুঃখেই হয়তো ছেলেদের নিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাকেশ।’’
এ দিন লক্ষ্মীর বাপেরবাড়িতে গেলে জানানো হয়, তিনি ঘুমোচ্ছেন। অনেক ডাকাডাকির পরে বাইরে এসে লক্ষ্মী দাবি করেন, ‘‘শাশুড়ি, ভাসুর মিথ্যা বলছেন। স্বামী মদ খেয়ে মারধর করত। তার প্রতিবাদ করাতেই আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ময়নাপুর গেলে আমাকে মারবে, তাই যাইনি।’’ সোমবার রাকেশ তাঁর কাছে আসেননি বলেও দাবি তাঁর।
গণেশের আফশোস, “রাতে ছেলেদের মায়ের ঘর থেকে কোলে নিয়ে যাওয়ার সময় ভাই বলেছিল, ‘আমার কিছু হয়ে গেলে বউ, শাশুড়িকে খবর দিবি না’। বুঝিনি, এমন কাণ্ড করে বসবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন