কোন শ্রেণিতে কী জানা উচিত, যাচাইয়ে বই

বিকাশ ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রকাশিত হচ্ছে একটি বই। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাম্য শিখন সামর্থ’। যে বইতে স্পষ্ট উল্লেখ করা থাকবে কোন শ্রেণির পড়ুয়ারা ন্যূনতম কী লিখতে বা বলতে পারবে। যেটাকে বলা হয় ‘লার্নিং আউটকাম।’

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া কি বাংলায় যুক্তাক্ষর-সহ কোনও বাক্য গঠনে সমর্থ? ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া কি হঠাৎ করে যে কোনও বিষয়ে অন্তত পাঁচটি ইংরেজি বাক্য লিখতে পারবে? অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ার ইংরেজিতে বাচ্য বা উক্তি পরিবর্তন সম্পর্কে কোনও সম্যক ধারণা রয়েছে?

Advertisement

এ বার এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই উদ্যোগী হচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। পাশ ফেল না থাকার কারণে একের পর এক শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হচ্ছে পড়ুয়ারা। কিন্তু তারা কী শিখছে সেই সম্পর্কে কোনও শিক্ষক বা স্কুলের ধারণা নেই বলেই সম্প্রতি রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে। এ বার সেটা যাচাই করার পথে হাঁটছে দফতর।

বিকাশ ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রকাশিত হচ্ছে একটি বই। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাম্য শিখন সামর্থ’। যে বইতে স্পষ্ট উল্লেখ করা থাকবে কোন শ্রেণির পড়ুয়ারা ন্যূনতম কী লিখতে বা বলতে পারবে। যেটাকে বলা হয় ‘লার্নিং আউটকাম।’ এই আউটকামের মাপকাঠি ঠিক না থাকার ফলে পড়াশোনার আসল উদ্দেশ্যটাই সফল হচ্ছে না বলে মত শিক্ষামহলের। বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শ মেনে এই বই তৈরি করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সমস্ত স্কুলে যেন এই বই পৌঁছে যায় তার জন্য দফতর উদ্যোগী হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত-রায়, ভোট কি অবৈধ? প্রশ্ন আদালতের

২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনের পর থেকে সকলের জন্য শিক্ষার পথে হাঁটা শুরু হয়েছে। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্তরে বন্ধ হয়েছে পাশ ফেল প্রথা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ওই প্রথা ফেরাতে চায়। রাজ্যও তাতে সম্মতিও দিয়েছে। তবে কোন শ্রেণি থেকে ফিরবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু হয়নি।

কয়েক মাস আগে স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং এর বিশ্লেষণে জানানো হয়েছিল পড়ুয়ারা কি শিখছে সে বিষয়ে শিক্ষকদের কোনও ধারণা নেই। এমনিতেই ইংরেজি মাধ্যমের সঙ্গে জোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলির। তার উপরে এ ভাবে লার্নিং আউটকাম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকার ফলে পড়াশোনার অগ্রগতি থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দফতরের। তাই এই উদ্যোগ।

আরও পড়ুন: এ বার কি ১৭ পুরসভাতেও প্রশাসক বসাবে রাজ্য সরকার?

দফতরের এক কর্তা জানান, ওই বইতে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে লার্নিং আউটকামের উপরে। অর্থাৎ কোন শ্রেণির পড়ুয়ারা কি লিখতে বা পড়তে পারে। এক একটি শ্রেণির লার্নিং আউটকাম এক এক রকমের হয়। কোনও শ্রেণিতে
বাংলায় যুক্তাক্ষর লেখা শেখায় তো কোথাও ইংরেজিতে বাচ্য ও বাক্য পরিবর্তন। আবার ইতিহাসের মোগলদের কাহিনী থেকে শুরু করে পর্বত ও মালভূমির পার্থক্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হয়। ওই বইতে উল্লেখ থাকবে কোন শ্রেণিতে কী শেখাতে হবে। পাঠ্যক্রম তো থাকছেই। কিন্তু সমাজ একজন পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার থেকে যেটা আশা করে সেটা কি আদৌ দিতে পারছে সে? পরীক্ষা হবে তারই।

স্কুল ইনস্পেক্টর (এসআই) বা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যেরা যখন স্কুল পরিদর্শন করবেন তখন ওই বই অনুসারে তা যাচাই করবেন। শিক্ষকেরাও এই মাপকাঠিকে মাথায় রেখেই পড়ুয়াদের পড়াবেন। এর ফলে পঠন পাঠনের উন্নতি ঘটবে বলেই মনে করছে দফতর। যদিও এই উদ্যোগে এত দেরি কেন সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন