মানচিত্রে প্রস্তাবিত সেতু।
সেতুর নকশা হয়ে গিয়েছে। তবে জমির বিষয়টি নিয়ে এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে পূর্ত দফতর। কালনা-শান্তিপুরের মধ্যে ভাগীরথীর সেতু নিয়ে মঙ্গলবার গুসকরায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ কথা জানালেন দফতরের কর্তারা। আর তা শোনার পরে মমতা বলেন, ‘‘মানুষ ভাল কাজই চান। কিছু রাজনৈতিক লোক ঢুকে গিয়ে প্রযোজন না থাকলেও বদমায়েশি করে। দেখে নিন। মানুষ চাইলে সেতু হবে, না চাইলে হবে না।’’
নদীর উপরে সেতু হলে এক দিকে পর্যটন, অন্য দিকে বাণিজ্য— দু’টি ক্ষেত্র প্রসার লাভ করবে বলে বহু বছর ধরে দাবি করে আসছেন দু’দিকের বাসিন্দারা। সেতুটির ব্যাপারে বাম আমলে এক বার উদ্যোগ হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে সেতুটি তৈরির জন্য কালনার বর্তমান বিধায়ক তথা পূর্ত দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বারবার রাজ্য সরকারের নজরে আনেন। সেতু তৈরির জন্য তৈরি হয় একটি বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর)। নির্মাণ-সহ নানা বিষয়ে খরচ ধরা হয় ৭৫০ কোটি টাকা। বছরখানেক আগে সেতুর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণাও করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দ ঘোষণার পর থেকে পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা বারবার কালনা ও শান্তিপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। পরীক্ষা করা হয় এলাকার মাটি। ২৮ ফেব্রুয়ারি দুই জেলার জন প্রতিনিধি, প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে রাজ্যের কর্তারা একটি বৈঠক করেন। সেতুটি তৈরির জন্য একটি মানচিত্র হয়েছে তৈরি করা হয়েছে। সে নিয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শনও করেন।
ব্যবস্থা ও নির্দেশ
• চাষিদের কিসান ক্রেডিট কার্ডে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি।
• প্রায় ন’শো কোটি টাকায় দামোদর অববাহিকায় সেচের উন্নতি ও বন্যা রোধ।
• বর্ধমান চালকগুলির জন্য ‘ফুড পার্ক’ গড়ার প্রস্তাব।
• পানাগড় শিল্পতালুকে নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ ক্যাম্প।
• বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তায় নজর।
• জামালপুরে বালি খাদান বন্ধে নজরদারি।
• পুকুর ভরাট আটকাতে ব্যবস্থা।
ওই মানচিত্র অনুযায়ী, সেতুটি হবে এসটিকেক রোড লাগোয়া পূর্ব সাতগাছিয়ার একটি হিমঘরের কাছ থেকে নদিয়ার শান্তিপুর কালীতলা পর্যন্ত। তবে পূর্ত দফতরের তৈরি করা এই সেতুর মানচিত্রে কিছুটা পরিবর্তন চেয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু। তিনি জানান, যে মানচিত্রটি তৈরি হয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ হলে মীরেরবাগান, পালপাড়া, সাহাপুর বেলতলা এলাকায় কমপক্ষে ৪০টি বাড়ি ভাঙা পড়বে। সেক্ষেত্রে ওই অংশে কিছুটা ঘুরিয়ে সেতুটি তৈরি করলে বাড়িগুলি রক্ষা পাবে। সে জন্য ৫০ মিটার বেশি কাজ করতে হতে পারে বলে তাঁর অনুমান। তাতে বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণ সরকারকে দিতে হবে না।
মঙ্গলবার বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনের আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সেতুর চূড়ান্ত মানচিত্র তৈরি হলেই জমি অধিগ্রহণ পর্ব শুরু হবে। সেক্ষেত্রে কাউকে জমি দেওয়ার জন্য জোর করা হবে না বলে জানান বিধায়ক। জেলা প্রশাসনের আশা, সব কাজ ঠিকমতো এগোলে বছরখানেকের মধ্যে সেতু তৈরি শুরু হয়ে যাবে।