সুপর্ণা জানা এবং মিলন প্রধান। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘায়ু কামনা করে শুক্রবারই মামাতো দাদার কপালে ফোঁটা দিয়েছিল ছোট্ট বোন। পরদিন সেই দাদার সঙ্গে খেলতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি। পুকুরে ডুবে মৃত্যু হল দাদা-বোন দু’জনেরই!
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের কনকপুর গ্রামে। মৃত মিলন প্রধান (১৩) এবং সুপর্ণা জানা (১০) মামাতো-পিসতুতো ভাই-বোন। মিলনের বাড়ি কনকপুরে। সুপর্ণা বেলদার আলমচকের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কালীপুজো উপলক্ষে কনকপুরে বেশ কয়েক দিন ধরে অনুষ্ঠান চলছে। তাই ভাইফোঁটার আগেই মা-বাবার সঙ্গে কনকপুরের মামাবাড়িতে এসেছিল সুপর্ণা। শুক্রবার ভাইফোঁটায় মামাতো দাদা মিলনকে ফোঁটা দিয়েছিল সে। বিকেলে সুপর্ণাকে মামাবাড়িতে রেখে ফিরে যান তার বাবা-মা। রবিবার ফের তাঁদের কনকপুরে আসার কথা ছিল। তার আগেই ঘটল অঘটন।
এ দিন সকালে মিলন ও সুপর্ণা বাড়ির ভ্যান রিকশা নিয়ে রাস্তায় খেলতে বেরিয়ে যায়। সুপর্ণাকে ভ্যানে বসিয়ে প্যাডেল করছিল মিলন। আর তাদের সমবয়সী কয়েক জন পিছন থেকে ঠেলছিল গাড়িটা। স্থানীয় সূত্রের খবর, পুকুরের পাড় ঘেঁষা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভ্যানটি উল্টে জলে পড়ে যায়। ডুবে যায় সুপর্ণা এবং মিলন। ভয় পেয়ে অন্য কচিকাঁচারা চম্পট দেয়। বেশ কিছুক্ষণ পরে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক মহিলা পুকুরের জলে ভ্যানটি ভাসতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা আসেন। এসে পৌঁছয় পুলিশও। পুকুরে নেমে শুরু হয় খোঁজ। তখনই সুপর্ণা এবং মিলনের দেহ উদ্ধার করা হয়।
উৎসবের মধ্যেই এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা কনকপুর। খবর পেয়ে এসেছেন সুপর্ণার বাবা-মা। তবে তাঁরা কেউই কথা বলার অবস্থায় নেই। মিলনের কাকা অমল প্রধান শুধু বলেন, ‘‘ভাই-বোন ভ্যানে চেপে ঘুরছিল। বাড়ির লোক বারণ করলেও শোনেনি। কখন নজর এড়িয়ে পুকুরের কাছে চলে গিয়েছে, কেউ টেরই পায়নি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।