Cattle Smuggling

সিবিআই জেরার পর গরু পাচার-কাণ্ডে গ্রেফতার বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার

২০১৫-র ডিসেম্বর থেকে ২০১৭-র এপ্রিল পর্যন্ত বাংলায় বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ।

Advertisement

নিসজ্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ২০:৪৭
Share:

অভিযুক্ত সতীশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।

গরু পাচার-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল বিএসএফ-এর কমান্ডান্ট পদমর্যাদার আধিকারিক সতীশ কুমারকে। মঙ্গলবার নিজাম প্যালেসে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিবিআই)-র আধিকারিকরা। দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন তিনি একাধিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। তদন্তে সহযোগিতা না করার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হবে।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বরে কেরলের বাসিন্দা এবং বিএসএফ কমান্ডান্ট জিবু ডি ম্যাথিউয়ের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন অর্থের উৎস খুঁজতে গিয়েই বাংলায় গরু পাচার-চক্রের হদিশ পায় সিবিআই। সেই সূত্র ধরে কলকাতায় গরু পাচার নিয়ে আলাদা একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাতেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), কেন্দ্রীয় শুল্ক (কাস্টমস)-সহ বিভিন্ন দফতরের একাধিক সরকারি আধিকারিকের নাম উঠে আসে। জানা যায়, মুর্শিদাবাদের ডাকসাইটে ব্যবসায়ী এনামুল হক ও তাঁর সিন্ডিকেট চক্রকে গরু পাচারে সহায়তা করতেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে বিশদে তদন্ত শুরু হলে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে এফআইআর-এ সতীশের নাম উঠে আসে।

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-র ডিসেম্বর থেকে ২০১৭-র এপ্রিল পর্যন্ত বাংলায় বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ। ওই ১৬ মাসে তাঁর বাহিনী মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল। কিন্তু সেই বাজেয়াপ্ত গরুকেই সরকারি খাতায় বাছুর হিসেবে দেখানো হচ্ছিল। গরুর যা দাম, তার চেয়ে কম দামে সেগুলি স্থানীয় বাজারে নিলাম করা হত। সেখান থেকে বাছুরের দামে গরু কিনে নিত পাচারকারীরা। এই পাচারচক্রের মাথায় ছিলেন এনামুল হক। তাঁর তত্ত্বাবধানে নিলামে কেনা ওই গরু আবার বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত। গরুকে বাছুর বানিয়ে দেওয়া বিএসএফ এবং কাস্টমস আধিকারিকদের সঙ্গে সংযোগ ছিল তাঁর। মোটা টাকা দিয়ে তাঁদের পুষিয়ে দিতেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছিল গরু, হয়ে যাচ্ছে বাছুর, কোটি কোটি টাকা ঘুষে অভিযুক্ত বিএসএফ-শুল্ক কর্তারা, রাজ্যে সিবিআই

আরও পড়ুন: গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ‘কিংপিন’ এনামুল হক

এনামুলকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁর বয়ানের সূত্র ধরে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সতীশের সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সেই সময় রায়পুরে কর্মরত ছিলেন সতীশ। সেখানেও তল্লাশি চালানো হয় একদফা। তাঁর গাজিয়াবাদের বাড়িতেও তল্লাশি চলে। তাতে আয়ের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ সঙ্গতিহীন সম্পত্তির হদিশ পান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জানা যায়, অনেক আত্মীয়ের নামেও স্থাবর সম্পত্তি কিনে রেখেছেন তিনি। ঘুষের টাকা বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ করেছেন। সেই মামলায় এ দিন জেরার জন্য কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডাকা হয় সতীশকে। সেখানেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন