কেরলের অঙ্ক মুছতে সক্রিয় ‘সংস্কারী’ বুদ্ধ

পলিটব্যুরোর বিবৃতি থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধবাবুকে আবার কেন আলাদা করে মুখ খুলতে হল, তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমে। দলের একাংশ অবশ্য মনে করছে, বাংলার বাস্তব মাথায় রেখে এ ক্ষেত্রেও প্রকাশ কারাটদের একটা বার্তা দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১২
Share:

সিপিএমের অন্দর মহলে কেরল আর বাংলার বিরোধ ছায়া ফেলল তালাক-প্রশ্নেও। যার জেরে দু’বছর পরে ফের বেশি রাতে জাগ্রত হয়ে বিবৃতি জারি করতে হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে।

Advertisement

কেরলে সিপিএম এখন ক্ষমতায়। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তাদের দাপটই প্রবল। অন্য দিকে লাগাতার বিপর্যয়ে বাংলার সিপিএম দলের কেন্দ্রীয় স্তরে কোণঠাসা। মুসলিম জনতার ভাবাবেগ মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে তৎক্ষণাৎ নিঃশর্তে স্বাগত জানাতে পারেননি কেরলের নেতারা। তাঁদের চাপেই পলিটব্যুরোর বিবৃতি সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে আরও পর্যালোচনা করে দেখার কথা বলেছিল। গোটা দিন অপেক্ষা করেছিলেন বুদ্ধবাবু। শেষ পর্যন্ত রাতে তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘আমি এই রায়কে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। এই রায় আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং প্রগতিকে সাহায্য করবে।’’

পলিটব্যুরোর বিবৃতি থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধবাবুকে আবার কেন আলাদা করে মুখ খুলতে হল, তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমে। দলের একাংশ অবশ্য মনে করছে, বাংলার বাস্তব মাথায় রেখে এ ক্ষেত্রেও প্রকাশ কারাটদের একটা বার্তা দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তৎক্ষণাৎ তালাক তুলে দেওয়ার রায়কে হাতিয়ার করে বংলাভাষী মুসলিম মহিলাদের কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা করছে বিজেপি। আবার তৃণমূল নীরব থেকে সংখ্যালঘুদের মনোভাব যাচাই করার চেষ্টায় আছে। গত কয়েক বছরে এ রাজ্যে মুসলিম ভোটে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে সিপিএম। এর পরে তিন তালাক নিয়ে ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ প্রতিক্রিয়া দিলে সংখ্যাগুরুদের বিরাগের মুখে পড়তে হবে এবং উপরন্তু বিজেপি লাভবান হবে— এই আশঙ্কা মাথায় রেখেই সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে দৃঢ় ভাবে স্বাগত জানান বুদ্ধবাবু। বছরদুয়েক আগে সংসদে তৃণমূলের সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ধর্না থেকে দলকে বিরত করতে বিবৃতি দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে এই তাঁর প্রকাশ্যে মুখ খোলা।

Advertisement

বুদ্ধবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে অবশ্য আরও একটি ব্যাখ্যা উঠে আসছে। ওই অংশের মতে, বুদ্ধবাবু বরাবরই মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শিক্ষা ও আচারের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার সমর্থক। মাদ্রাসার বদলে মুসলিম ছেলেমেয়েরা প্রথাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়লে উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এক বার সীমান্ত এলাকার মাদ্রাসার কাজকর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেও বিতর্কের মুখে পিছিয়ে এসেছিলেন। এ বার তালাক-প্রশ্নে তাঁর সংস্কারপন্থী মতবাদ সামনে এসেছে বলেই ওই অংশের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন