দীপাবলিতে মন খারাপ পাহাড়ের

দীনেশ বলেন, ‘‘সাড়ে তিন মাস বন্‌ধ ছিল। বিহারে বাড়ি চলে যাই। পাহাড় খুলতেই ফিরেছি। ঠান্ডা শুরুর মরসুমে পর্যটকেরা আসছেন,  তবে কম।’’

Advertisement

কিশোর সাহা ও কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১২
Share:

সকাল থেকে ঝলমলে হলুদ রোদ। পরিষ্কার সাদা কাঞ্চনজঙ্ঘা। হালকা হাওয়ায় পুরোদস্তুর উৎসবের আমেজ। এমন মনোরম আবহাওয়াতেও মনে খারাপ দার্জিলিঙের। ম্যাল চৌরাস্তার এক কোণে ছোট্ট বেলুনের দোকান নিয়ে বসে প্রকাশ রাই। ম্যালে বেলুন বিক্রি করেই সংসার চলে। কিন্তু ঝলঝলে পরিবেশেও বিক্রি খুব কম। তাই সন্ধ্যায় একরকম খালি হাতে কাকঝোড়ায় বাড়ি ফিরেছেন প্রকাশ।

Advertisement

একা প্রকাশ নন। দার্জিলিঙের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীরই একই হাল। পর্যটক না থাকায় দীপাবলিতে ব্যবসা জমেনি। চকবাজারের সুমেরু মঞ্চের কাছে আলুকাবলির অস্থায়ী দোকান দীনেশ সিংহের। দীনেশ বলেন, ‘‘সাড়ে তিন মাস বন্‌ধ ছিল। বিহারে বাড়ি চলে যাই। পাহাড় খুলতেই ফিরেছি। ঠান্ডা শুরুর মরসুমে পর্যটকেরা আসছেন, তবে কম।’’

মোর্চার আলোচনাপন্থী নেতা তথা জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ অবশ্য দাবি করেছেন, ধীরে ধীরে হলেও অনেকটা ছন্দে ফিরেছে পাহাড়। তিনি বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর সময়ে পাহাড়ে দশাই উৎসব তেমন জমেনি। কারণ, মহাষষ্ঠীর দিন জনজীবন স্বাভাবিক হয়েছিল। সেই তুলনায় দেওয়ালির রাতে পাহাড়বাসীর ‘তেহার’ অনেকটাই জমজমাট।’’ তিনি জানান, চেনা ছন্দে ফিরতে আরও কিছুটা সময় লাগবে পাহাড়বাসীর।

Advertisement

তিন দিনের সফর সেরে কলকাতা ফিরেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। তিনি বলেছেন, ‘‘পর্যটকেরা আসছেন। আরও আসবেন। পুলিশ ও প্রশাসন সেই কাজ করছে। কোনও গোলমাল আমরা পাহাড়ে হতে দেব না।’’

মিরিকের পুরপ্রধান নিজেই ঘুরে ঘুরে বাসিন্দাদের উৎসাহিত করেছেন। অনেককে উৎসবের মরসুমে যাতে রসদের জোগান থাকে, সে জন্য সহযোগিতাও করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘টানা বন্‌ধ, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দখল কাটাতে একটু সময় তো লাগবেই।’’

পাহাড়ে এখন পর্যটকদের ঘোরাফেরায় অসুবিধা নেই। সকালে টাইগার হিলেও মোটামুটি ভিড় হচ্ছে। তবে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যাই বেশি। এই সময়টা পর্যটকদের ভিড় কার্যত উপচে পড়ত। একটি পর্যটন সংস্থার কর্তা সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এই সময় হোটেলগুলি ৮০ শতাংশ বোঝাই থাকার কথা। তা এখন ২৫-৩৫ শতাংশ রয়েছে। এমন চললে বড়দিনের মরসুমটা খারাপ হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন