উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের কয়েকশো শিক্ষকের বিএড প্রশিক্ষণ নিয়ে কেন্দ্র কী চিন্তাভাবনা করেছে, তা রাজ্যকে জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর ববি শরাফ সম্প্রতি ওই নির্দেশ দিয়েছেন।
এ রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে কর্মরত কয়েকশো শিক্ষক-শিক্ষিকার বিএড প্রশিক্ষণ নেই। ২০১৩ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে তাঁরা চাকরি পান। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ৫০ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছেন বলে বিএড প্রশিক্ষণ নিতে কোনও কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না তাঁরা। কারণ, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন’-এর (এনসিটিই) নিয়ম, বিএড প্রশিক্ষণ নিতে হলে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায়
কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। এই নিয়ম তাঁদের ক্ষেত্রে শিথিল করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন এমন শ’দুয়েক শিক্ষক-শিক্ষিকা।
ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আইনজীবী এক্রামুল বারি শনিবার জানান, নিয়োগপত্র পেয়ে তাঁর মক্কেলরা বিভিন্ন স্কুলে যখন যোগ দেন, সেই সময় রাজ্যে পর্যাপ্ত বিএড প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল না। রাজ্য এনসিটিই কর্তৃপক্ষের কাছে বিএড প্রশিক্ষণ নেওয়ার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানায়। এনসিটিই কর্তৃপক্ষ রাজ্যকে জানিয়ে দেন, চাকরিতে যোগ দেওয়ার দু’বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
এক্রামুলবাবু জানান, ২০১৫ সালে সংসদে ‘দ্য রাইট অব চিলড্রেন টু ফ্রি অ্যান্ড কমপালসরি এডুকেশন’ আইনে সংশোধনী আনা হয়। ওই সংশোধনীতে প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় দু’বছর বাড়িয়ে চার বছর (২০১৯ পর্যন্ত) করা হয়েছে। তাতেও সমস্যা মিটছে না। কারণ প্রশিক্ষণ পাওয়ার মূল শর্ত, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর।
গত বছর মার্চে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের তৎকালীন সচিব বিবেক কুমার মানব সম্পদ মন্ত্রকের অধীন উচ্চ শিক্ষা সচিবকে চিঠি দিয়ে জানান, কয়েকশো শিক্ষক-শিক্ষিকার ক্ষেত্রে বিএড প্রশিক্ষণ নেওয়ার নিয়ম শিথিল করা যায় কি না, তা রাজ্যকে জানানো হোক। সেই চিঠির উত্তর এখনও রাজ্য পায়নি।
আইনজীবী জানান, গত সপ্তাহে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। কেন্দ্রের পক্ষে কোনও আইনজীবী হাজির ছিলেন না। বিচারপতি শরাফ কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন, যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্যের চিঠির উত্তর দিতে। পরবর্তী শুনানি ১৬ অগস্ট।