Calcutta High Court

তৃণমূলের শিক্ষক নেতাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করুন! সিআইডিকে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট

সিরাজুলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন ওই নির্দেশ পরিবর্তন করে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ২০:১৫
Share:

তৃণমূলের শিক্ষক নেতাকে নিয়ে কড়া নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

হাওড়ায় তৃণমূলের শিক্ষক নেতা সিরাজুল ইসলামকে অবিলম্বে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। চুরি করে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার সিআইডিকে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বলেন, ‘‘শুক্রবারই ওই শিক্ষক নেতাকে গ্রেফতার করুন। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করুন। ওই শিক্ষক নেতাকে আবার স্কুলে দেখতে পাওয়া গেলে আদালত কড়া পদক্ষেপ করবে।’’ আগামী ৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন সিআইডিকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে।

Advertisement

অন্য দিকে, সিরাজুলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন ওই নির্দেশ পরিবর্তন করে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, যে হেতু মামলাটি সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন, তাই ওই বিষয়ে সেই বেঞ্চই সিদ্ধান্ত নেবে। আপাতত বহিষ্কারের পরিবর্তে সিরাজুলকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছে আদালত।

তৃণমূলের ওই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০০১ সালে বাম আমলে বেআইনি ভাবে তিনি চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বিচারপতি বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিল। শুক্রবার শুনানিতে হাই কোর্টের মন্তব্য, ‘‘ওই শিক্ষক নেতা মহান ব্যক্তি! দুর্নীতি করেও তিনি রেহাই পেতে চাইছেন।’’ আদালত জানায়, তাঁর বেতন আপাতত বন্ধ থাকবে।

Advertisement

রাজ্য সরকারের কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সোমা রায় নামক এক চাকরিপ্রার্থী এই অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর করা মামলায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল আদালত। বিচারপতি বসুর নির্দেশ ছিল, সারা রাজ্যে বেআইনি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত তদন্ত করবে ওই কমিটি। সেই তদন্তেই সিরাজুলের নাম প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, তার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

শুধু নিয়োগ দুর্নীতি নয়, সিরাজুলের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছিল বলে আদালতে জানান মামলাকারীর আইনজীবী। পরে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে সিরাজুলের নাম প্রকাশ্যে আসে। বিচারপতি বসু সিরাজুলের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, পুলিশ সিরাজুলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে না। ফলে আদালতে পুলিশের ভূমিকাও সমালোচিত হয়। বিচারপতির নির্দেশের পাঁচ মিনিটের মধ্যে সিরাজুলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল হাওড়া সদর থানা। বিচারপতি বসুর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিরাজুল। বিচারপতি মান্থা এবং বিচারপতি গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, ওই শিক্ষক চুরি করে চাকরি পেয়েছেন। কোনও ভাবেই তাঁর চাকরি থাকতে পারে না। তাঁর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। এর পরেই সিরাজুলের চাকরি বাতিল করে দেয় আদালত। শুক্রবার সেই বরখাস্ত করার নির্দেশ পরিবর্তন করে ডিভিশন বেঞ্চ। সিরাজুলকে সাসপেন্ড করেছে সেই বেঞ্চ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement