Calcutta High Court on 100 Days Work

বাংলায় দ্রুত ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে! কেন্দ্রকে বলে দিল হাই কোর্ট, বকেয়া নিয়ে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ

হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের যে অর্থ রাজ্যের পাওয়ার কথা, যা বকেয়া রয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ১২:০১
Share:

(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পশ্চিমবঙ্গে দ্রুত ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে তেমনটাই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। ১০০ দিনের কাজের যে অর্থ রাজ্যের পাওয়ার কথা, যা বকেয়া রয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে হবে। এক মাস পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। শুক্রবার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছে।

Advertisement

১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। অভিযোগ, কেন্দ্র এই খাতে রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রেখেছে। ফলে দীর্ঘ দিন ১০০ দিনের কাজ হচ্ছে না। মানুষ রোজগার হারাচ্ছেন। পাল্টা কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বক্তব্য, ১০০ দিনের টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছে তৃণমূল। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সেই কারণেই টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের টাকা না-পেয়ে রাজ্যের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে এই ধরনের কাজের প্রকল্পও শুরু করেছিল তৃণমূল। কেন্দ্রের বকেয়া নিয়ে হাই কোর্টে মামলা চলছে।

রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ শুরু করার নির্দেশ আগেও দিয়েছিল হাই কোর্ট। বলা হয়েছিল, ১ অগস্ট থেকে এই কাজ চালু করতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের মামলা খারিজ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে তারা কোনও মন্তব্যই করতে চায়নি। তার পর আবার মামলাটি এসেছে হাই কোর্টে। শুক্রবার তাই দ্রুত ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে বলেছে উচ্চ আদালত।

Advertisement

গত তিন বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও কম হয়নি। গত জুন মাসে হাই কোর্ট বলেছিল, ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে হবে। দুর্নীতি রুখতে রাজ্য সরকারকে যে কোনও শর্ত দিতে পারে কেন্দ্র। কিন্তু কাজ আটকে রাখা যাবে না। কেন সাধারণ মানুষ এর জন্য ভুক্তভোগী হবে? প্রশ্ন তুলেছিল আদালত।

১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তারা হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং— এই চার জেলায় ‘৫০০ লক্ষেরও’ (৫০ কোটি) বেশি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করে। আদালত জানিয়েছিল, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ নিয়ে তারা কোনও মন্তব্য করতে চায় না। প্রয়োজনে এই চার জেলাকে বাদ দিয়ে রাজ্যের বাকি অংশে ১০০ দিনের কাজ চালু করতে হবে। আদালত জানায়, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প, যার পুরো টাকাই দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়। জনস্বার্থে তাই এই কাজ চালু হওয়া দরকার।

২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের মজুরি দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি। মামলাকারীদের তরফে আদালতে আবেদন করা হয় যে, এখনও পর্যন্ত যা বকেয়া মজুরি, সেই টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া হোক। তা ছাড়া এত দিন টাকা বন্ধ করে রাখার জন্য ০.০৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়। একই বিষয়ে হাই কোর্টে পৃথক মামলা করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। চেয়েছিলেন সিবিআই তদন্ত। সেই মামলাতেই হাই কোর্টে ফের ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement