কলকাতা হাই কোর্ট।
একদিনের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে মাকে ঘরে ফেরানোর জন্য ছেলেকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যথায় ছেলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
সোমবার মামলার শুনানিতে আইনজীবী ইন্দ্রদীপ রায়চৌধুরী জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিন ছেলে ও এক মেয়েকে বড় করে তুলছেন হাওড়ার বাঁকড়া দক্ষিণপল্লির বাসিন্দা বৃদ্ধা বন্দনা শিট। বাঁকড়া দক্ষিণপল্লিতেই ২০০৫ সালে নিজের নামে একটি জমি কিনে, সেখানে দোকান করে সংসার চালান তিনি। বন্দনাদেবীর অভিযোগ, ওই জমি দেখিয়ে হাওড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ঋণ নেন বড়ছেলে মনোজ। সেই টাকা শোধ করতে না পেরে স্থানীয় এক প্রোমোটারের সঙ্গে মিলে মনোজ ওই জমি বিক্রির পরিকল্পনা করেন। বৃদ্ধার আরও অভিযোগ, গত মে মাসের ২৬ তারিখে মনোজ এবং ওই প্রোমোটার জোর করে তাঁর সই করাতে আসেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধরও করা হয়। এরপরও একাধিকবার মারধর করা হয় তাঁকে। এমনকী তাঁর এক হাত ভেঙেও দেওয়া হয়। এরপর ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্যত্র থাকতে শুরু করেন তিনি। অভিযোগ, ডোমজুড় থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোনও লাভ হয়নি। নিজের বাড়ি ফিরতে চেয়ে ডোমজুড় থানায় আবেদন করেছিলেন তিনি। অভিযোগ, পুলিশ কোনও ব্যাবস্থা নেয়নি। তাই বাড়ি ফিরতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা।
এ দিন বিচারপতি বসাক বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। তার মধ্যে মাকে বাড়িতে না ফেরালে সারা দেশের কোথাও সে থাকতে পারবে না বলেও মনোজকে সতর্ক করে দেন বিচারপতি।
বিচারপতির এই কড়া অবস্থানেও অবশ্য ভরসা পাচ্ছেন না বন্দনাদেবী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আদালত বড় ছেলে মনোজকে আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বটে। কিন্তু আমার খুব ভয় করছে।’’ কিন্তু কেন? বন্দনাদেবীর কথায়, ‘‘প্রথম বার মারধর করার পর আমরা ডোমজুড় থানায় যাই। পুলিশ এসে আমাদের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে যায়। তারপরেও অন্তত তিন বার বিভিন্ন সময়ে আমাকে এবং আমার ছোট ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। শেষবার মারধর করা হয় ১১ জুন রাতে। ছোট ছেলে পুলিশ ডেকেছিল। কিন্তু পুলিশের সামনেই আমাদের দু’জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপরে কোন ভরসায় বাড়ি ফিরব।’’ তিনি জানান, বড় ছেলে মনোজ, মেজ ছেলে পঙ্কজ তাঁর স্ত্রী পুতুলকে যদি ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় বা পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা করা হয় তবেই তিনি বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুক। একই কথা জানান তাঁর ছোট ছেলে সেচ দফতরের অস্থায়ী কর্মী স্বপনও।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।