নিম্ন আদালতে জামিন-যুদ্ধে জিতে তিনি ছাড়া পেয়েছেন পাঁচ দিন হতে চলল। তাঁর মুক্তি বাতিল হবে নাকি বহাল থাকবে, সে প্রশ্নের ফয়সালার জন্য এ বার উচ্চতর আদালতে শুরু হচ্ছে হচ্ছে সওয়াল-জবাবের পালা। সব ঠিকঠাক থাকলে সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের জামিন খারিজের আবেদন নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি হওয়ার কথা।
তার আগে, বুধবার বিকেলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি একই রকম। জামিনলাভের পরে এসএসকেএম থেকে সোজা বাড়ি ফিরলেও মঙ্গলবার মদনবাবু ওই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। এ দিন বিকেলে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের দেওয়া মেডিক্যাল বুলেটিন মোতাবেক, বুকের বাঁ-দিকে ব্যথা হচ্ছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। হাসপাতালের দাবি: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলেও মদনবাবু এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। সকালে তিনি কিছু খাননি। ঘুমিয়েছেন অনেক বেলা পর্যন্ত। যদিও মধ্যাহ্ণভোজ সেরেছেন হাসপাতালের নিয়ম মেনে।
মদনের ‘অসুস্থতা’ নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষও অব্যাহত। ‘‘ওঁর ফিট বা আনফিট হওয়া চিকিৎসা-বিজ্ঞান মেনে হচ্ছে না। রাজনীতি মেনে হচ্ছে।’’— এ দিন বলেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। মদন মিত্রের ‘মানসিক অবসাদ’ প্রসঙ্গে বিমানবাবুর মন্তব্য, ‘‘যিনি সত্যের জয় বলে বাড়ি গেলেন, পর দিন তিনি অবসাদে ভুগবেন কেন?’’
গত শনিবার (৩১ অক্টোবর) আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে মদনের জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরে সিবিআই অভিযোগ তোলে, কোর্ট মন্ত্রীকে ‘একতরফা ভাবে’ জামিন দিয়েছে। এই যুক্তিতে মদনের জামিন বাতিল করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। আবেদনে সিবিআইয়ের দাবি: আলিপুর আদালতের বিচারক আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন যে, প্রভাবশালী মন্ত্রী মদন মিত্রকে তিনি জামিন দেবেন। নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশ সম্পূর্ণ অবৈধ বলে হাইকোর্টে অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এই মর্মে হাইকোর্টের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি ঈশানচন্দ্র দাসের এজলাসে সিবিআইয়ের মামলাটি দাখিল হয় মঙ্গলবার। এবং ওই দিন বেলা দু’টোয় সেটি যখন শুনানির জন্য ওঠে, ততক্ষণে মদনবাবু নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন। সে দিন বিচারপতি টন্ডন সিবিআই-কৌঁসুলির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, আবেদনের প্রতিলিপি মদন মিত্রের কৌঁসুলিকে দেওয়া হয়েছে কি না। সিবিআই জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মদনবাবুর হাতে আবেদনের প্রতিলিপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শুনে বিচারপতি জানান, নিয়ম অনুযায়ী মদনবাবুর কৌঁসুলির হাতেই প্রতিলিপি দিতে হবে। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন তিনি।
সিবিআই অবশ্য মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ মদনবাবুর কৌঁসুলি নীলাদ্রি ভট্টাচার্যের হাতে মামলার প্রতিলিপি তুলে দিয়েছে।