বর্ষবরণের দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা নানা পদে ভূরিভোজে বছরকে স্বাগত জানানোর রেওয়াজ নতুন কিছু নয়। তবে, এ বছর নববর্ষের অনুষ্ঠানে নতুন ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে ‘সম্প্রীতি’র উপরে। সকলেরই দাবি, বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ নববর্ষকে এত ‘গুরুত্ব’ দেওয়া কেন?
আয়োজকদের অধিকাংশের দাবি, বাংলার সংস্কৃতি সব রকম দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে। সেখানে ক্ষমতা প্রকাশের প্রতিযোগিতা নেই। সেটাই আরও এক বার প্রমাণ হবে বাংলার নতুন বছরে।
কলকাতার দক্ষিণে নববর্ষের সকালে হবে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, আবার বিকেলে কলেজ স্কোয়্যারে বেরোবে নববর্ষের ‘জুলুস’। এ ছাড়া, আরও অনেক সংগঠনই উদ্যোগী হয়েছে পথে নেমে নববর্ষ উদ্যাপনে। নববর্ষের সকালে গাঙ্গুলিবাগান থেকে যাদবপুর পর্যন্ত শোভাযাত্রায় থাকবে রণপা, ছৌ, পট-সহ বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি। অন্যতম উদ্যোক্তা অমিতাভ চন্দ জানালেন, বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুপ্রেরণায় এই শোভাযাত্রা। তাঁদের শোভাযাত্রার অন্যতম বার্তাই হল সম্প্রীতি। থাকবে বিশাল মুখোশ, সেই সঙ্গে বিষ্ণুপুরের ঘোড়া, যেমন দেখা যায় বাংলাদেশের শোভাযাত্রায়। ওই শোভাযাত্রা সাজিয়ে তুলতে এসেছেন বাংলাদেশের শিল্পীরা। নববর্ষের প্রাক্কালে রাস্তা জুড়ে দেওয়া হবে আল্পনা। অমিতাভবাবু জানালেন, এই শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়ার কথা বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট জনের। সংগঠনের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই-কমিশনারকেও। তাঁর পক্ষ থেকেই শোভাযাত্রায় পাঠানো হচ্ছে বাউল শিল্পীদের। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘সম্প্রীতির লক্ষ্যে আমাদের এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ বছর শুরু হল পথ চলা।’’
ওই দিনই বিকেলে কলেজ স্কোয়্যারে হবে নববর্ষের ‘জুলুস’। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা অভিজিৎ নন্দী বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রক্ষা করাটা খুব জরুরি। সেই ডাকেই এই আয়োজন।’’ নববর্ষ উপলক্ষে আগামী শনি ও রবিবার কসবায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এই অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান সে কথাই মনে করিয়ে দেবে। এ অনুষ্ঠান শুধুই সম্প্রীতির।’’