মহাকাশে কেরিয়ার

রাকেশ শর্মা, কল্পনা চাওলা, সুনীতা উইলিয়ামস— মহাকাশের প্রসঙ্গে এদের নামগুলোই ভেসে আসে মনে। কিন্তু এঁরা হলেন মহাকাশচারী। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রটা আরও অনেক বড়। জেনে রাখা ভাল, মহাকাশচারী হওয়ার পথ অনেক কঠিন। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করাটা একেবারেই প্রাথমিক শর্ত এখানে। স্পেস এজেন্সিগুলির (যেমন নাসা) নির্ধারিত ওজন-উচ্চতা-দৃষ্টিশক্তির মাপকাঠিতে থেকে নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক শক্তির পরীক্ষায় পাশ করার পরে চলে কড়া ট্রেনিং। আর একটি প্রাথমিক শর্ত অভিজ্ঞ পাইলট হওয়া। খুব কম ভাগ্যবানই মহাকাশচারী হওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু এই মহাকাশযাত্রা সফল করার পিছনে যাঁরা থাকেন, সেই ‘স্পেস ইঞ্জিনিয়ার’দের দলে নিজেকে যুক্ত করা ততটা কঠিন নয়। মহাকাশযন্ত্রের নকশা থেকে খুঁটিনাটি তৈরি ছাড়াও স্যাটেলাইট বানানোর কারিগরও এঁরা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৩
Share:

কিন্তু এই মহাকাশযাত্রা সফল করার পিছনে যাঁরা থাকেন, সেই ‘স্পেস ইঞ্জিনিয়ার’দের দলে নিজেকে যুক্ত করা ততটা কঠিন নয়। মহাকাশযন্ত্রের নকশা থেকে খুঁটিনাটি তৈরি ছাড়াও স্যাটেলাইট বানানোর কারিগরও এঁরা। যে স্যাটেলাইট আজকের দুনিয়ায় সব কিছু—টিভির সম্প্রচার থেকে মোবাইলে দূরভাষ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস থেকে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ। এয়ারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এভিওনিক্স অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, মেটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, স্পেস ক্র্যাফট ইঞ্জিনিয়ারিং, টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং—নানা শাখায় পড়ে ‘স্পেস ইঞ্জিনিয়ার’ হওয়া যায়। আর বিজ্ঞানের প্রায় সমস্ত শাখা থেকেই এসে ‘স্পেস সায়েন্টিস্ট’ হওয়া যায়। যেমন ফার্মাকোলজির কোনও গবেষক মহাকাশে প্রাপ্ত নতুন কোনও বস্তু থেকে ওষুধ তৈরির গবেষণা করতে পারেন, বায়োলজিস্ট অন্য গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে, মেটিওরোলজিস্ট অন্য গ্রহের আবহাওয়া নিয়ে, জিওলজিস্ট অন্য গ্রহের উপরিভাগ নিয়ে। এছাড়াও ইলেকট্রিশিয়ান থেকে ড্র্যাফটার—মহাকাশের বিচিত্র কক্ষপথে অনেকেরই কাজ আছে। তবে, একেবারে স্নাতক স্তর থেকে বিশেষ করে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়েই পড়তে চাইলে যে প্রতিষ্ঠানটির নাম সবার আগে আসে, সেটি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (অাইআইএসটি) তিরুবনন্তপুরম। এখানে চার বছরের বিটেক কোর্স হয় এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং আর এভিওনিক্স-এ। বিটেক, এমটেক মিলিয়ে পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড কোর্সও রয়েছে। ভর্তির জন্য সর্বভারতীয় স্তরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষা দিয়ে তালিকায় নাম ওঠাতে হবে।

Advertisement

এছাড়াও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং (দেহরাদুন), বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (রাঁচি), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (বেঙ্গালুরু) ও অাইআইটিগুলোতে এই সম্পর্কিত কোর্স পড়ানো হয়। পড়াশোনা শেষে কাজের সুযোগ মিলবে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (অাইএসআরও), ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও), হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড, ন্যাশনাল এয়ারোনটিক্যাল ল্যাবরেটরিজ ও এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ-এ। এছাড়া কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো, গবেষণা করা —এই সমস্ত তো রয়েছেই। ইসরো স্যাটেলাইট সেন্টার (আইএসএসি), লিকুইড প্রোপালসন সিস্টেম (এলপিএসসি), ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং এজেন্সি (এনআরএসএ), স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (এসএসি) এবং ডঃ বিক্রম সারভাই স্পেস সেন্টার (ভিএসএসসি) -এ গবেষণা করা যায়। নিয়োগকারীদের তালিকায় সবার উপরে অবশ্যই ইসরো। ১৯৬৯ সালে স্থাপিত প্রতিষ্ঠান রিমোট সেন্সিং ও কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটে বিস্তার ছড়িয়েছে বহু দূর। মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও নানা কাজে যুক্ত এরা। প্রতি বছর এপ্রিল নাগাদ ইসরো পরীক্ষা নেয়। বিই বা বিটেক (ইলেকট্রিকাল, ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং)-এ ৬৫ শতাংশের বেশি পেলে বসা যায়। বেতন এতটাই ভাল যে এই নিয়ে না ভাবলেও চলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন