দাড়িভিটে জখমদের মারধর নিয়ে মামলা

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট-কাণ্ডের দিন জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের রাস্তা আটকে আবার এক দফা মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুল।—নিজস্ব চিত্র।

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট-কাণ্ডের দিন জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের রাস্তা আটকে আবার এক দফা মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু কারা তা করেছে, তা নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দারা এখনও অন্ধকারে। অথচ ঘটনার পরে এক মাসের বেশি সময় কেটেছে। তাই দাড়িভিট-কাণ্ডে নিহত ও আহতদের পরিবারের তরফে গোলাপাড়ায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা আটকে মারধরের অভিযোগ পেয়েই মামলা রুজু হয়েছে। তা নিয়ে তদন্ত চলছে।’’ প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ ও গোয়েন্দারা জেনেছেন, ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলিবিদ্ধ তাপস বর্মনকে বাইকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাড়ির লোকেরা। গুলিবিদ্ধ বিপ্লব সরকার, রাজেশ সরকারকে ছোট পিক-আপ ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সকলেরই গন্তব্য ছিল, ১৫ কিলোমিটার দূরের ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল। কিন্তু, দাড়িভিট স্কুল থেকে ইসলামপুরে যাওয়ার পথে ৫ কিলোমিটার দূরে অমলঝারি এলাকার মোড়ে শ’তিনেক লোক রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ নিহত ও আহতদের পরিবারের।

সে দিন জখম দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব এখন অনেকটাই সুস্থ। তার বাবা গোবিন্দবাবু চতুর্থীর দিনে গোটা ঘটনা লিখিত ভাবে ইসলামপুর থানায় জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ওই দিন গাড়ি-বাইক আটকে আহতদের উপরে হামলা চালানো হয়। প্রায় ২০-২৫ মিনিট মারধর চলে। অতটা সময় নষ্ট না হলে হয়তো রাজেশ ও তাপসকে বাঁচানো যেত। কারা, কেন এমন মরণাপন্নদের উপরে হামলা করেছে তা পুলিশকে খুঁজে বার করে ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’

Advertisement

কিন্তু দুর্গাপুজোর ছুটির আগে পর্যন্ত অভিভাবকদের একাংশের আন্দোলনের জেরে স্কুল খুলতে পারেনি প্রশাসন। ফলে ইতিমধ্যেই নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ওই স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ৩২০ জন। তার মধ্যে ২৭৬ জন পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হলেও সেই নথি এখনও পর্যন্ত পর্ষদে জমা পড়েনি। একই কারণে, দশম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিলি থমকে রয়েছে। দশম শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ২০০। ১৫ নভেম্বর থেকে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। জেলা ভারপ্রাপ্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিতকুমার মাইতির দাবি, ‘‘ওই স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের শিক্ষার ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা প্রচণ্ড উদ্বেগে রয়েছি।’’ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তাপসের মা ঝর্না বর্মণের অবশ্য দাবি, ‘‘তাপস ও রাজেশকে পুলিশ গুলি করে খুন করেছে। ওদের খুনের বিচার ও দোষী পুলিশকর্মীদের শাস্তির দাবিতে অভিভাবক ও পড়ুয়ারা টানা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন