Cattle Smuggling

স্বাস্থ্যসাথীর জন্য জমা আধারে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট! গরু পাচার মামলায় আদালতে জানাল সিবিআই

বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিউড়ি শাখায় এর আগে প্রায় ৩৩০টি ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের তথ্য আদালতে জমা দিয়েছিল সিবিআই। এ দিন একই ব্যাঙ্কের আরও ১১৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য আদালতে জমা দেয় তারা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৮
Share:

ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে জমা দিল সিবিআই। প্রতীকী ছবি।

গরু পাচার মামলায় আরও ১১৫টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে জমা দিল সিবিআই। তাদের দাবি, রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য জমা নেওয়া আধার কার্ড ব্যবহার করে ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে। শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে তোলা হয়। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে ফের জেল হেফাজতে রেখে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে আনার নির্দেশ দেন।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে বীরভূমের বিজেপি নেতা তথা বিধায়ক অনুপ সাহার কটাক্ষ, ‘‘আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে থাকা একটা দল তৃণমূল। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে জমা দেওয়া নথি ব্যবহার করে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলাই সেটা প্রমাণ করে।’’ বীরভূম তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয়। তাই মন্তব্য নয়।’’

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সিউড়ি শাখায় এর আগে প্রায় ৩৩০টি ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের তথ্য আদালতে জমা দিয়েছিল সিবিআই। এ দিন একই ব্যাঙ্কের আরও ১১৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য আদালতে জমা দেয় তারা। এই সব অ্যাকাউন্টে চালকলের টাকার লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। আইনজীবীরা জানান, বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই দাবি করে, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের বয়ান নেওয়া হয়েছে। ম্যানেজার মাত্র দু’দিনে অ্যাকাউন্টগুলির কাগজপত্রে সই করেছেন বলে জানিয়েছেন। বিচারক প্রশ্ন করেন, এত কাগজে মাত্র দু’দিনে কী ভাবে সই হল? সিবিআই দাবি করে, ম্যানেজার তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, ‘চাপের মুখে’ তা করতে হয়েছে।

Advertisement

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কী ভাবে ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, সে ব্যাখ্যাও চান বিচারক। সিবিআই দাবি করে, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড তৈরি করতে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে আধার কার্ড জমা নেওয়া হয়। সেগুলি ব্যবহার করেই ওই অ্যাকাউন্টগুলি তৈরি করা হয়েছে।

ঘটনাচক্রে, সিউড়ির একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা দাবি করেছেন, তাঁদের নামে যে ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে, তা তাঁরা জানতেনই না। সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পরে তা জেনেছেন। তাঁদের আবার ধারণা, ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আধার কার্ড জমা দিতে হয়েছিল। সেগুলি ব্যবহার করে তাঁদের অজ্ঞাতে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। এ দিন আদালতেও সিবিআই দাবি করে, ওই অ্যাকাউন্টগুলি যাঁদের নামে, তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জন সই করতেই জানেন না। ওই ১৬ জনেরই দাবি, তাঁরা এই অ্যাকাউন্টগুলির বিষয়ে কিছু জানেন না। তাঁদের আরও ভাল করে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বিচারক সিবিআইকে নির্দেশ দেন।

এ দিন সিবিআই আরও দাবি করে, অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী রাজীব ভট্টাচার্যের অ্যাকাউন্ট থেকেও বোলপুরের ‘ভোলেবোম’ চালকলে টাকা পাঠানো হয়েছে। এ দিন অনুব্রতের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ মক্কেলের জামিন চেয়ে আবেদন করেননি। তবে, ‘ভোলেবোম’ চালকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি চালু করার জন্য আবেদন করেন তিনি। ১৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি হবে। অনুব্রতকে সংশোধনাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্যও সিবিআইকে অনুমতি দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন