বাকি সম্পদও খোয়াচ্ছে রোজ ভ্যালি

রোজ ভ্যালি তদন্তে গতি বাড়িয়ে সিবিআই গত ২০ দিনের মধ্যে পর পর দুই সাংসদকে গ্রেফতার করেছে। রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আর্জিও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

শুরু হয়েছে সাঁড়াশি আক্রমণ।

Advertisement

রোজ ভ্যালি তদন্তে গতি বাড়িয়ে সিবিআই গত ২০ দিনের মধ্যে পর পর দুই সাংসদকে গ্রেফতার করেছে। রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আর্জিও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও। আপাতত তাদের কাজ রোজ ভ্যালির বিভিন্ন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা। গত কয়েক মাসে ১২৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি তারা হাত বাড়াচ্ছে রোজ ভ্যালির ১০টি হোটেল ও রিসর্টের দিকে। এ ছাড়া রয়েছে একটি বিনোদন পার্কও।

অফিসারদের কথায়, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অসম, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, এমনকী অন্য কয়েকটি রাজ্যেও বহু সম্পত্তি কিনে রেখেছে রোজ ভ্যালি। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর জমিও। তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘এ সমস্তই বাজার থেকে সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে, তাঁদের বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে তোলা টাকায়।’’ এই টাকাতেই সোনার গয়নার ব্যবসাও খুলেছেন গৌতম তাঁর মেয়ের নামে।

Advertisement

ইডি-র মূল কাজ যতটা সম্ভব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাখা। পরে রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু বা সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই সব সম্পত্তিই বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে আমানতকারীদের। আর, সুদীপ্ত, গৌতমরা মামলায় জিতে গেলে তাঁরাই ফেরত পাবেন এই সম্পত্তি।

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ এই তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এর আগে রোজ ভ্যালির যে ৭টি হোটেল ও রিসর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা বিক্রি করলে ১২৫০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। এটা আজকের বাজারদর। ই়ডি জানিয়েছে, ওই ৭টি রিসর্ট ও হোটেল কেনা ও তৈরির জন্য খরচ হয়েছিল ৪৬৫ কোটি টাকা। ইডি-র অফিসারদের কথায়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যে ১০টি হোটেল ও রিসর্ট এবং একটি বিনোদন পার্ক বাজেয়াপ্ত করা হবে, তার বাজারদর ২০০০ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে। সূত্রের খবর, এর মধ্যে মন্দারমণির হোটেলটিও রয়েছে। এ ছাড়াও শিলিগুড়ি, লাটাগুড়ি, ফালাকাটার কুঞ্জনগর, দুর্গাপুর, হরিদ্বার, নিউ দিঘা, মেদিনীপুর, যোরহাট ও গয়ার হোটেল রয়েছে। বিনোদন পার্কটি রয়েছে ত্রিপুরায়, আগরতলার কাছে আমতুলিতে।

এই হোটেল, রিসর্ট ছাড়াও এখনও রোজ ভ্যালির প্রচুর সম্পত্তি আগামী দিনে বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে ইডির তালিকায় রয়েছে। যার মধ্যে জমির পরিমাণটাই বেশি। ইতিমধ্যেই রোজ ভ্যালি কর্ণধারের রোলস রয়েস, লিমুজিন-সহ ১২টি দামি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরও কয়েকশো গাড়ি রয়েছে বাজেয়াপ্ত করার তালিকায়।

ইডি জানিয়েছে, এই হোটেল ও রিসর্ট যে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে তা সাময়িক। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ) অনুযায়ী সাময়িক বাজেয়াপ্ত (প্রভিশনাল অ্যাটাচমেন্ট) করে তার কাগজপত্র পাঠানো হচ্ছে দিল্লিতে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক থেকে সবুজ সঙ্কেত আসার পরে সম্পূর্ণ হবে বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া। সম্প্রতি ১২৫০ কোটি টাকার যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে সেটাও সাময়িক। দিল্লি থেকে সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় রয়েছেন ইডি অফিসারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন