—ফাইল চিত্র।
সারদা মামলায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ এবং সারদার অন্যতম কর্তা সোমনাথ দত্তকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। সোমবার সেই জিজ্ঞাসাবাদের সময় ডেলো পাহাড়ের বৈঠক, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেল হেফাজতে থাকাকালীন, সারদা-কাণ্ডের নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কুণাল ৯১ পাতার একটি চিঠি তদন্তকারী সংস্থার কাছে পাঠান। সেই চিঠিতে কুণালের বক্তব্য এখন যাচাই করা হচ্ছে। তিনি যাঁদের সম্পর্কে লিখেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেই তাঁকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা চলছে।’’
সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার আগে একটি আর্থিক সংস্থা থেকে কোন পরিস্থিতিতে তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন, এ দিন সোমনাথবাবু বিস্তারিত ভাবে তা জানিয়েছেন বলে দাবি সিবিআইয়ের। সোমনাথবাবুর বয়ান অনুযায়ী পরবর্তী পর্যায়ে তদন্তের প্রয়োজনে আরও কয়েক জনকে তলব করা হবে। কুণাল আগে সিবিআইয়ের কাছে লিখিত ভাবে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি তদন্তকারীদের সামনে সারদা মামলায় বিভিন্ন অভিযুক্তের মুখোমুখি বসতে চান। এ দিন কুণালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের তদন্তে সহযোগিতা করছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’ সোমনাথবাবু ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি। এ দিন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী শিবাজী পাঁজাও সিবিআইয়ের কাছে গিয়েছিলেন। ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি কিনেছিলেন। সেই টাকা তিনি কোথা থেকে পেয়েছিলেন, তা জানতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সংক্রান্ত নথি জমা দিতেই শিবাজী এ দিন সেখানে যান।
এর মধ্যে শাসক দলের আরও এক প্রাক্তন সাংসদকে নোটিস জারি করেছে সিবিআই। সেই প্রাক্তন সাংসদ তথা শিল্পপতি বেশ কিছু সংস্থার মালিক। সিবিআই সূত্রের খবর, সেই সব সংস্থার যাবতীয় হিসেব চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, ওই প্রাক্তন সাংসদ বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি কলকাতায় ফিরেছেন। বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার তদন্তে নেমে সেই সব সংস্থার বেশ কয়েক জন কর্তাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই সব অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্তাদের অনেকের সঙ্গে ওই প্রাক্তন সাংসদের বিভিন্ন সময়ে আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে জেরায় জানিয়েছেন তাঁরা। তার পরেই ওই প্রাক্তন সাংসদকে চিঠি দিয়ে তাঁর দেশি ও বিদেশি সংস্থার সব নথি নিয়ে তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য নোটিস জারি করা হয়েছে বলে জানান সিবিআইয়ের কর্তারা। এ দিন ওই প্রাক্তন সাংসদ জানান, এই ধরনের কোনও নোটিস তিনি পাননি।