মমতার ছবি নিয়ে তদন্তে সিবিআই

সম্প্রতি তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজাকে ডেকে বার দুয়েক জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। সেখানে বারবার ওঠে ছবির প্রসঙ্গ। শিবাজি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি কিনেছিলেন বলে সিবিআইয়ের দাবি।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি কে বা কারা কিনেছিলেন, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। ছবির ক্রেতাদের সকলকে একে একে ডেকে পাঠানো হবে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজাকে ডেকে বার দুয়েক জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। সেখানে বারবার ওঠে ছবির প্রসঙ্গ। শিবাজি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি কিনেছিলেন বলে সিবিআইয়ের দাবি। সেই টাকার উৎস জানতে চাওয়া হয় শিবাজির কাছে। সেই সংক্রান্ত কিছু নথিও তিনি জমাও দিয়েছিলেন সিবিআইয়ের কাছে। সেই সব নথি যাচাইয়ের জন্য তাঁর এক সময়ের সহযোগী ব্যবসায়ী কৌস্তুভ রায়কে বুধবার ডেকেছিল সিবিআই।

সিবিআই সূত্রে খবর, প্রশ্নের মুখে কৌস্তুভ বলেছেন, তিনি ছবি সম্পর্কে কিছু বোঝেন না। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবির দাম কত হওয়া উচিত তা তিনি বলতে পারবেন না। পরে ফোনে কৌস্তুভ বলেন, ‘‘শিবাজি ছবি কেনার পরে এক দিন মুকুলদা (রায়) আমাকে ফোন করে জানতে চান, শিবাজির কেনা ছবি কোথায় পাঠাবেন? আমি জানাই, ছবি শিবাজি কিনেছে। তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পদোন্নতিতে জারি সংরক্ষণ: সুপ্রিম কোর্ট

কৌস্তুভের দাবি, ২০১১ সালে তাঁদের সংস্থায় প্রভূত মুনাফা হয়। সেই মুনফারই একটি অংশ দিয়ে ছবি কিনেছিলেন শিবাজি। তিনি এ দিন সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র সিবিআই-কে দিয়েও এসেছেন। কৌস্তুভ জানান, শিবাজি যে ছবিগুলো কিনেছিলেন, সেগুলি তাঁর অফিসেই টাঙানো ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে সংস্থা থেকে সরে যান। শিবাজি সংস্থা ছাড়ার পরে অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে সেই সব ছবিও তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মুকুল রায়কে এ দিন ফোনে ধরা হলে তিনি অবশ্য দাবি করেন, ‘‘মমতার ছবি বিক্রির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। মমতা নিজেই ছবি বিক্রির বিষয়টি দেখভাল করতেন।’’ সিবিআই সূত্রের কিন্তু দাবি, শিবাজি ছবির জন্য যে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন, তা গিয়েছিল তৃণমূলের মুখপত্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আর মুকুল রায়ই ছিলেন সেই মুখপত্রের তৎকালীন প্রধান।

সিবিআইয়ের আরও দাবি, অন্য যাঁরা মমতার ছবি কিনেছিলেন, তাঁরা বেশিরভাগই তৃণমূলের মুখপত্রের অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলেন। কেউ নগদ টাকাও দিয়েছেন। সেই তালিকায় সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন, রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুও রয়েছেন। তদন্তকারীদের অভিযোগ, এত টাকা দিয়ে কেউ যদি ছবি কেনেন, তা হলে তা সযত্নে ভাল করে টাঙিয়ে রাখার কথা। কিন্তু প্রায় সকলেই আর পাঁচটা সাধারণ জিনিসের মতো তা রেখে দিয়েছেন। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, তা হলে কি ধরে নিতে হবে যে, টাকাটা দেওয়াই প্রধান উদ্দেশ্য ছিল? ছবি কেনা নয়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন