সিবিআই অফিসে।-নিজস্ব চিত্র
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় বিভিন্ন সময়ে নানা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবির বেচাকেনার কথা উঠেছে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে সেই সব ছবির হস্তান্তর নিয়ে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই।
ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের একাংশ জানান, ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি বিক্রি করা হয়েছিল। সেই জন্য একটি অনুষ্ঠানও হয়েছিল কলকাতার টাউন হলে। অভিযোগ উঠেছিল, বিভিন্ন বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার সঙ্গে সেই ছবি বেচাকেনার সম্পর্ক রয়েছে। আর সেই সব ছবি বিক্রির সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রেই সোমবার শিবাজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সিবিআইয়ের খবর।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সল্টলেকে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দফতরে হাজির হন শিবাজি। ছ’ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের অফিসারেরা। তদন্তকারীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, রোজভ্যালির মালিক গৌতম কুণ্ডুর মতো ব্যবসায়ীরা কিনেছিলেন বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর ক’টি ছবি কারা কারা কিনেছেন, ছবিগুলির দামই কী ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে সারদা-প্রধান সুদীপ্ত এবং ওই গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ধৃত আরও কয়েক জন এবং একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের দলীয় আয়-ব্যয়ের হিসেবও চেয়ে পাঠিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের কাছে তৃণমূলের তরফে দলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত হিসেব দাখিল করা হয়েছে। সেখানে ২০১১-’১২ এবং ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষ মিলিয়ে মোট ছ’কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার ছবি বিক্রির হিসেব দেখানো হয়েছিল।
সিবিআইয়েরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, সারদার সঙ্গে শিবাজির আর্থিক লেনদেন ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। ধৃত সাংসদ কুণাল ঘোষ এ ব্যাপারে বহু বার অভিযোগ করেছেন। সিবিআই-কে লেখা চিঠিতেও শিবাজির নাম করেন বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, কী কারণে সারদা থেকে ওই ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন হয়, সেই বিষয়েও শিবাজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। শিবাজির পাশাপাশি এই তদন্তে রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর কথাও তদন্তে উঠে এসেছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।