দু’তিনটি ধাপে নারদের চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। —ফাইল চিত্র।
নারদ কাণ্ডের তদন্ত শেষ। চার্জশিট দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। ৩১ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে এ কথা জানাতে চলেছে সিবিআই। সংস্থা সূত্রের খবর, দু’তিনটি ধাপে নারদের চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে অন্তত সাত-আট জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে সিবিআইয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-এর জুলাই মাসে নারদ কাণ্ডে চার্জশিট পেশ করতে চেয়ে সিবিআইয়ের কলকাতা অফিস তৎকালীন অধিকর্তা অলোক বর্মার অনুমোদন চেয়েছিল। তিনি স্পর্শকাতর মামলাগুলি সংস্থার ডিরেক্টর অব প্রসিকিউসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেই আইনি শাখা চার্জশিট পেশের ব্যাপারে অনুমোদন দেয়নি। বর্মা চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তিকালীন অধিকর্তা হন নাগেশ্বর রাও। কলকাতা অফিস ফের চার্জশিট পেশের অনুমতি চায়। ডিসেম্বরে নাগেশ্বর রাও সেই অনুমোদন দিয়ে গিয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। সংস্থার এক মুখপাত্র জানাচ্ছেন, বর্তমান অধিকর্তা ঋষিকুমার শুক্লর কাছেও কিছু বিষয়ে অনুমতি
চাওয়া হয়েছে। তা এসে গেলে হাইকোর্টে সিবিআই চূড়ান্ত মতামত জানিয়ে দেবে।
সংস্থার খবর, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করতে চেয়েই অভিযোগগুলি সাজিয়েছে সিবিআই। তবে নারদ-কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের রেকর্ড করা ভিডিয়ো থেকে যা পাওয়া গিয়েছে তাতে দু’তিন জনের ক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এখনই প্রমাণ করা শক্ত। তাই প্রথম চার্জশিটে তাঁদের নাম না-ও থাকতে পারে।
সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, নারদের অভিযুক্তেরা ক্যামেরার সামনে টাকা নিচ্ছেন এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে। তাঁরা অনেকে সে সময় সাংসদ ছিলেন, কিন্তু এখন রাজ্যের মন্ত্রী। অনেকে সে সময় মন্ত্রী ছিলেন, এখন নয়। কিন্তু তদন্তের নিয়মানুসারে ঘটনা ঘটার সময় তিনি সাংসদ বা বিধায়ক থাকলে যথাক্রমে লোকসভা ও বিধানসভার স্পিকারের কাছ থেকে ‘প্রসিকিউসন’ চালানোর অনুমতি নিতে হবে। সিবিআই সেই কাজও ধাপে ধাপে শুরু করবে।
নারদ মামলার ভিডিয়োটি আসল কি না তা সিবিআইকে জানাতে বলেছে হাইকোর্ট। যে ফোনে টাকা নেওয়ার দৃশ্য রেকর্ডিং করা হয়েছিল, সেটি অ্যাপল সংস্থার কাছে চেয়েছে সিবিআই। ফলে এমন সময়ে চার্জশিট পেশ কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিবিআইয়ের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ম্যাথু পুরো ঘটনা স্বীকার করেছেন। তদন্তকারীরা এক-দু’জন ছাড়া অন্য সবার বাড়ি গিয়ে যে স্থানে টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা যাচাই করে এসেছেন। অভিযুক্তরাও টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ফরেন্সিক পরীক্ষায় অভিযুক্তদের গলা মিলে গিয়েছে। অনেকেই নেওয়া টাকা কোথায় খরচ হয়েছে, তা সঠিক ভাবে দেখাতে পারেননি। সব মিলিয়ে ঘটনা যে ঘটেছিল, তা নিয়ে সিবিআইয়ের কোনও সংশয় নেই। সেই কারণেই সিবিআই চার্জশিট পেশ করবে।