তৃণমূল নেতাদের নামে ‘সিবিআইয়ের চিঠি’

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এবং দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুর আলম হোসেনের নামের চিঠিও ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

তৃণমূলের একাধিক নেতার নামে ‘সিবিআইয়ের চিঠি’ নিয়ে তোলপাড় কোচবিহার। গত দু’দিন ধরে তৃণমূল নেতাদের নামে থাকা ওই চিঠি ‘ভাইরাল’ হয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে। চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, একই তারিখে, একই সিরিয়াল নম্বরে ওই চিঠি ইস্যু হয়েছে। চিঠিতে তৃণমূল নেতাদের নামে একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম যে চিঠিটি ছড়িয়ে পড়ে, তাতে যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিকের নাম ছিল। পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এবং দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুর আলম হোসেনের নামের চিঠিও ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

চিঠিটি এসেছে দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর থেকে। সেখানে বলা হয়েছে, ওই তৃণমূল নেতাদের নামে মানুষ পাচার, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসা এবং প্রচুর বেনামী সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগ আছে। এই চিঠির সত্যতা নিয়ে সব মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। কোচবিহার পুলিশ জানিয়েছে, তারা ‘ভাইরাল’ ওই চিঠি হাতে পেয়েছে শুধু। সিবিআইয়ের তরফে তাদের কিছুই জানানো হয়নি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওই চিঠি সত্যতা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

অন্য দিকে, দিল্লিতে সিবিআই দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা জানিয়েছে, সত্যতা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে। তবে এখনই তারা এই নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ। তৃণমূল নেতারা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “ওই চিঠি গত ৮ জানুয়ারি ইস্যু করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। আর চিঠি যে ভাবে আঁকাবাঁকা, তাতে তা জাল বলে আমাদের সন্দেহ। সিবিআই এমন ভাবে কাউকে চিঠি দেয় না। সিবিআইয়ের গোপন চিঠি ফাঁস হয়েছে, এমনটাও শুনিনি।”

Advertisement

তা হলে এই চিঠির পিছনে রহস্য কোথায়? তৃণমূলেরই একাংশের দাবি, এই চিঠিও সম্ভবত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে যুব ও মূল তৃণমূলের মধ্যে লড়াইয়ে তপ্ত এবং রক্তাক্ত কোচবিহার। সেই ভোটের সময় থেকে ৬০টিরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার প্রায় একশো জন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দ্বন্দ্ব থামাতে নির্দেশ দিয়েছেন নেতাদের। কাজ হয়নি। শাসকদলের একাংশের দাবি, এতে যুব-তৃণমূলের লড়াই থাকতে পারে। তৃণমূলের আর একটি অংশের অভিযোগ, বিরোধীদের একটি অংশ জাল চিঠি তৈরি করে নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। এক তৃণমূল নেতা বলেন, “এমন হতে পারে যুব-তৃণমূলের লড়াইয়ের সুযোগ নিয়েছে কেউ। যাঁদের নামে ওই চিঠি, তাঁরা দলে বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। তাঁদের বদনাম করে কেউ ফায়দা তুলতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন